• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপদ ভূমি ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২৪  

বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমারের এ সীমান্ত এলাকাটি অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, ভৌগোলিক অবস্থান এবং দুর্গম হওয়ায় কোনো দেশেরই নিয়ন্ত্রণ নেই। এ কারনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপদ ভূমিতে পরিণত হয়েছে ত্রিদেশীয় সীমান্ত এলাকা ‘ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল’। এ সুযোগে ওই এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-সহ কমপক্ষে ২০ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমার সীমান্তে বিশাল এলাকাটি অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, ভৌগোলিক অবস্থান এবং দুর্গম হওয়ার কারণে বলতে গেলে কোনো দেশেরই কর্তৃত্ব নেই। এ সুযোগে ওই এলাকা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপদ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ওই সংগঠনগুলো প্রতিকূল পরিবেশে ওই এলাকায় আত্মগোপন করে।’

দেশের সীমান্ত এলাকার অপরাধ নিয়ে গবেষণা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর অঞ্চলের উপ-পরিচালক হুমায়ন কবির খোন্দকার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমারের ত্রিদেশীয় দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ‘ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল’-এ কমপক্ষে ২০ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। এ সংগঠনগুলোর আয়ের প্রধান উৎস মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা।’ ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে আনুষ্ঠানিক কথা বলতে রাজি হননি পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, দুর্গম ওই এলাকায় অভিযান চলানোর মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রচুর অর্থ ও লোকবলের প্রয়োজন হবে। যার কোনোটাই এই মুহূর্তে পুলিশের নেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমারের ত্রিদেশীয় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ‘ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল’ এখন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্বর্গভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভারতের মিজোরাম রাজ্য, বাংলাদেশের বান্দরবান ও রাঙামাটি এবং মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্যের ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিচরণ রয়েছে কমপক্ষে ২০ বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং শতাধিক মিলিশিয়া গ্রুপের। ‘ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল এলাকাটি খুবই দুর্গম এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ, ভারত কিংবা মিয়ানমার কোনো দেশেরই নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই বিশাল এ এলাকাটি বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন সংগঠনের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে। ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেল নিয়ন্ত্রণ করে কমপক্ষে ২০ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ও শতাধিক মিলিশিয়া গ্রুপ। যার মধ্যে রয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এ সংগঠনের প্রশিক্ষিত সদস্যরা ব্ল্যাক টায়াঙ্গেলের দুর্গম এলাকায় অবস্থান করেছে।

সম্প্রতি কেএনএফ মিডিয়া উইংয়ের ক্যাপ্টেন ফ্লেমিং দাবি করেছেন- কেএনএফের ৪ হাজারের অধিক সশস্ত্র সদস্য ‘নিরাপদে’ আছে। বাংলাদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দাবি- কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপন করেছে কেউ কেউ। ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেলের অংশ কাচিন এবং সান স্টেটে ‘নর্দান অ্যালায়েন্স’ নামে একটা জোট রয়েছে। এ জোটের অপর নাম হচ্ছে ‘ব্রাদার্সহুড’। এ জোটের সদস্য হচ্ছে- আরাকান আর্মি (এএ), টাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাট অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ)। তাদের সহযোগী সংগঠন হিসেবে রয়েছে কাচিন ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (কেএলও), ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্মেন্ট, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং ইউনাইটেড ওয়াহ স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ)। ব্ল্যাক ট্রায়াঙ্গেলে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী অন্য সংগঠনগুলো হচ্ছে- কাচিন ডিফেন্স আর্মি (কেডিআই), কাচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), চিন ন্যাশনাল আর্মি, চিন ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), চিন লিবারেশন আর্মি, মিজু ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) অন্যতম। বর্তমানে এ অঞ্চলে ব্যাপকহারে উৎপাদন হচ্ছে মাদকের অন্যতম উপাদান অপিয়াম। এ ছাড়া গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল খ্যাত মিয়ানমারের মাদকের রাজধানী খ্যাত সান স্টেট থেকেও এ অঞ্চল হয়ে ব্যাপকহারে আসছে ইয়াবার চালান। মাদক চালান ছাড়াও এ অঞ্চলে ব্যাপকহারে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। যা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশ, ভারত এবং মিয়ানমারের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর হাতে।

 

ঝালকাঠি আজকাল