• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

বিশিষ্টজনদের চোখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের চার দশক

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  

আজ মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। হিসাবে তার বয়স ৭৪ বছর। পঁচাত্তরে একদল বিপথগামী সৈন্যের হাতে তার পরিবারের সবাই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সেসময় বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। এরপর দীর্ঘদিন বিদেশে নির্বাসিত থাকার পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে দলের দায়িত্ব নেন তিনি।

সেই থেকে টানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। নেতৃত্বের হিসাবে সেটা চার দশক। এই স্বল্প সময়ে আন্তর্জাতিক ২৬টি পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। সম্মানিত হয়েছেন ক্রাউন জুয়েল বা মুকুট মণি, মাদার অব হিউম্যানিটি, কওমী জননী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা বা দেশরত্নসহ নানা উপাধিতে। পেয়েছেন অগণিত নেতাকর্মীর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একক দৃষ্টান্ত; যাকে জীবন দিয়ে সুরক্ষা দিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

 শেখ হাসিনা গত চার দশকে তার বাবা ও আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং দর্শন মেনে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বপালন করেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালন করে চলেছেন। সবক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি, তার মূল চালিকাশক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন। আজ স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত তিনি। সেখানেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের বিষয়টিই মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে 

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রধানমন্ত্রী ও এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের চার দশক কেমন ছিল? এ বিষয়ে প্রশ্ন ছিল বিশিষ্টজনদের কাছে। জবাবে তারা বলেছেন, পিতার আদর্শ ও দর্শন অনুসরণ করে সোনার বাংলা গড়ার যাত্রায় অগ্রগামী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনা; পাশাপাশি রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রের মর্যাদা ও উন্নয়ন; এ দুটি ধারণ করে তিনি এগিয়ে চলেছেন। এটি খুবই ইতিবাচক। বিশিষ্টজনরা এ যাত্রায় তার সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।

শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত চার দশকে তার বাবা ও আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং দর্শন মেনে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বপালন করেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালন করে চলেছেন। সবক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি, তার মূল চালিকাশক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন। আজ স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত তিনি। সেখানেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের বিষয়টিই মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।’

jagonews24বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, ‘তার চার দশকের নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। যে কারণে আজ জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশন নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) তাকে এসডিজি অগ্রযাত্রা পুরস্কার দিয়েছে। এটি একটি বিরল সম্মান। এখানেই বাংলাদেশের সার্বিক যে অগ্রগতি হয়েছে—গণতন্ত্র, সমাজব্যবস্থা, শিক্ষা-সংস্কৃতি; সবক্ষেত্রেই এটি একটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি। এর আগেও আমরা দেখেছি, শেখ হাসিনাকে এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।’

 বিভিন্ন রকমের যে হুমকি ছিল। জঙ্গিবাদ, করোনা, হেফাজত ইত্যাদি। এসব তিনি (শেখ হাসিনা) কোনো না কোনোভাবে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। রোহিঙ্গাদেরও এখন পর্যন্ত আমরা (বাংলাদেশ) রাখতে পারছি। ছোট একটা দেশ। জনসংখ্যা বিশাল। তারপরও মানুষ কমপক্ষে দু’বেলা খেতে পারছে। চলাফেরা করতে পারছে। আমি মনে করি, এটা একটা বিশাল ব্যাপার 

ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) এই জন্মদিনে তিনি নতুনভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। আমি তার সুস্থ ও সফল জীবন কামনা করি। দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশের মানুষকে নেতৃত্ব দিন, এ আশা ব্যক্ত করি।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমরা এখন যেই বাংলাদেশ দেখছি, এটা দুই দশক আগেও কল্পনা করিনি। সবাই উন্নয়নের বিষয়টা গুরুত্ব দেন। উন্নয়ন যে হয়েছে সেটা সমালোচকরাও স্বীকার করেন এবং এটি আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। সেই উন্নয়নের ভাগটা একেবারেই সাধারণের কাছে কতটুকু পৌঁছেছে, সেটা গবেষণার বিষয়। তবে আমরা মনে করি, বৈষম্যটা বেড়েছে। হয়তো পুঁজিবাদের এরকম উত্থানে বৈষম্য বাড়ে। এখন সরকারের প্রধান চেষ্টা হবে বৈষম্য কমানো।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের যে হুমকি ছিল। জঙ্গিবাদ, করোনা, হেফাজত ইত্যাদি। এসব তিনি (শেখ হাসিনা) কোনো না কোনোভাবে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। রোহিঙ্গাদেরও এখন পর্যন্ত আমরা (বাংলাদেশ) রাখতে পারছি। ছোট একটা দেশ। জনসংখ্যা বিশাল। তারপরও মানুষ কমপক্ষে দু’বেলা খেতে পারছে। চলাফেরা করতে পারছে। আমি মনে করি, এটা একটা বিশাল ব্যাপার।’

jagonews24১৯৮১ সালে দেশে ফিরে দলের নেত্বত্ব নেন শেখ হাসিনা

 আমাদের প্রতিবেশী বড় দুটি দেশ ভারত ও চীন। ভারত ও চীনের মধ্যে আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। তার মধ্যে দুটি দেশকেই বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে পাশে রেখে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারসাম্যমূলক কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এসডিজিতেও আমাদের ঈর্ষান্বিত অর্জন আছে এবং আমরা তার (শেখ হাসিনা) নেতৃত্বে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো বড় সংকটকে মানবিকভাবে মোকাবিলা করছি 

মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘এখন কাজ হবে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা ও করোনার ক্ষয়ক্ষতি সামলে ওঠা। বৈষম্য হ্রাস করা। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে জিডিপি বাড়ানো। এই জিডিপি হ্রাস পেয়েছে।’ উন্নয়নের পাশাপাশি এটাতেও জোর দেওয়া বাঞ্ছনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে এনেছেন। গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। পাশাপাশি একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রের মর্যাদা ও উন্নয়ন; এ দুটি সামনে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। এটিকে আমি খুবই ইতিবাচকভাবে দেখি।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে বাংলাদেশের উল্টোযাত্রা শুরু হয়েছিল; পাকিস্তানের পথে বা স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিদের দর্শনের দিকে। ১৯৮১ সালে যখন তিনি ফিরে আসেন তার আগমনেই বাংলাদেশ সঠিক পথের দিশা পায়। তখনই বাংলাদেশকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে আনেন। এটি ছিল তার প্রথম অর্জন। দ্বিতীয় অর্জন হলো—বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদল। কারণ, পঁচাত্তরের পর দীর্ঘদিন সামরিক শাসন ছিল। বেসরকারি লেবাসে বা অন্য বেশে সামরিক শাসন। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার কাজটি করেন শেখ হাসিনা।’

jagonews24১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা

ঝালকাঠি আজকাল