• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

নতুন মডেলে তৈরি হচ্ছে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০১৯  

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর এসে এবার পাল্টে যাচ্ছে সব চিত্র। নতুন মডেলে, নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে কাজ। এ রকম অবস্থায় আজ রবিবার সারা দেশে উদ্‌যাপন করা হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। মূলত ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হলেও সেদিন শুক্রবার থাকায় আজ এটি উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। আর ঢাকায় জাতীয়ভাবে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠান হবে আগামী ৩০ এপ্রিল।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ উদ্যোগে তৃণমূলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেশে চালু হয় কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামোভিত্তিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতি ছয় হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য গড়ে তোলা হয় একটি করে ক্লিনিক, যেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিনা মূল্যে ৩০টি ওষুধ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যা মডেল হিসেবে নিয়েছে বিশ্বের আরো কিছু দেশ, আবার এই সেবার সুবাদে বাংলাদেশ পেয়েছে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে একদিকে রোগীদের ভিড় বেড়ে গেছে, এসব দিক পর্যবেক্ষণে নিয়েই আমি নিজে নতুন মডেল তৈরি করিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে চারটি নকশা দেখিয়েছি, তিনি এর মধ্য থেকে একটি পছন্দ করেছেন। সেই মডেলটিই এখন পর্যায়ক্রমে সারা দেশে বাস্তবায়ন করার কাজ শুরু হয়েছে।’

মন্ত্রী জানান, নতুন মডেলের প্রতিটি ভবনে চারটি রুম থাকবে, দুটিতে সেবাদানকারীরা বসবেন, একটি রোগীদের ওয়েটিং রুম আরেকটি লেবার (ডেলিভারি) রুম হিসেবে ব্যবহৃত হবে। বাধরুম থাকছে দুটি। ফ্লোর ও ওয়াল পুরোটাই টাইলস ফিটিং থাকছে। এককথায় আধুনিক মানের একটি ক্লিনিক হিসেবে গড়ে উঠছে প্রত্যন্ত গ্রামের ভেতর থাকা এসব ক্লিনিক।

স্বাস্থ্য সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুসারে দেশে মোট ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছিল। একপর্যায়ে ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের সময় ওই কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ওই কার্যক্রম পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে ‘রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়। পর্যায়ক্রমে এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) পদ সৃষ্টি করে এরই মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার) অধ্যাপক ডা. আবুল হাসেম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি এখন একটি ট্রাস্টে রূপ নিচ্ছে। এরই মধ্যে এর প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে ক্লিনিকের পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলোতে অনেক বেশি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে এরই মধ্যে আমরা নতুন মডেলের ভবন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি, বেশ কয়েকটির কাজ সম্পন্নও হয়েছে। এ বছরের মধ্যে আরো ৪০০টির কাজ সম্পন্ন করা হবে। বাকিগুলোর কাজ পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে।

তিনি জানান, সিএইচসিপিরা নিয়োগ পাওয়ার পরপরই ছয় মাসের একটি বেসিক ট্রেনিং পেয়ে থাকেন প্রাথমিক চিকিৎসার ওপর। ফলে তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম হন। তাঁরা রোগীদের প্রয়োজন অনুসারে ৩০টি ওষুধ দিতে পারেন। এর মধ্যে সাধারণ ২৭টি ওষুধ ও তিনটি পরিবার পরিকল্পনার সামগ্রী। এ ছাড়া তাঁদের কাছে উচ্চ রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ট্যাব, স্টেথোস্কোপ, ওয়েট মেশিনসহ আরো কিছু উপকরণ দেওয়া আছে।

ঝালকাঠি আজকাল