• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

জাতিসংঘ অধিবেশনে গুরুত্ব পাবে জলবায়ু ও শরণার্থী ইস্যু

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০১৯  

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নিয়মিত বার্ষিক অধিবেশনে এবার জলবায়ু ও শরণার্থী ইস্যু গুরুত্ব পাবে। পরিষদের ৭৪তম অধিবেশন প্রতিবছরের মতো এবারও সেপ্টেম্বরের তৃতীয় মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে।

আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবশনটি । অধিবেশনে শতাধিক রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই অধিবেশনে অংশ নেবেন।

জানা গেছে, এবারের অধিবেশনে জলবায়ু ও শরণার্থী ইস্যু সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। এরপর গুরুত্ব পাবে টেকসই উন্নয়ন ও অভিবাসন সমস্যা। এছাড়া পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলের বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। এর বাইরে গতবারের মতো এবারো রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টিও অধিবেশনের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।

নির্দিষ্ট ভাবে কার্যতালিকায় না থাকলেও ধারনা করা হচ্ছে অধিবেশনে কাশ্মীর ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এছাড়া কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তপ্ত অবস্থার অবসানে ট্রাম্প মধ্যস্থতা করার ইচ্ছে প্রকাশ করায় বিষয়টি অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে বসবে বৈশ্বিক জলবায়ু প্রশ্নে একটি শীর্ষ বৈঠক। একই দিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আমন্ত্রণে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রশ্নে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সাধারণ বিতর্ক চলাকালে আরও বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে।

২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কিত জাতিসংঘের উচ্চস্তরের রাজনৈতিক ফোরামের (এইচএলপিএফ) বৈঠক। এই বৈঠক ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর সারাদিন ধরে চলবে।

পরেরদিন 'উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন' বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলের বিষয়েও বৈঠক হবে।

ক্ষুদ্র দ্বীপগুলোর উন্নয়ন এবং এ বিষয়ের অগ্রগতি নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

অধিবেশনের কার্যতালিকা থেকে জানা গেছে, প্রথম সাত দিন অতিবাহিত হবে ২১ জন উপসভাপতির নির্বাচন ও বিভিন্ন পদ্ধতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে। ইতিমধ্যেই নাইজেরিয়ার তিজ্জানি মোহাম্মদ-বান্ডে চলতি অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। অধিবেশনের মূল আকর্ষণ সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে। চলবে দুই সপ্তাহ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদা, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, সৌদি আরবের যুবরাজ ও উপপ্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রমুখ এরই মধ্যে অধিবেশনে যোগ দেয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনি আসছেন না। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর না আসার বিষয়টিও মোটামুটি নিশ্চিত।

গতবারের মতো এবারও সবার নজর থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকে। পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া এবং সম্প্রতি ইরানের সাথে দেশটির বৈরিতা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অধিবেশনে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন তিনি।

গতবছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই ভাষণে তিনি রোহিঙ্গা সংকট, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এবারের অধিবেশনেও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য প্রদাণ করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয় ও কনস্যুলার) কামরুল আহসান বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের প্রধান ৬টি শাখার মধ্যে অন্যতম। বৈশ্বিকভাবে এটি সাধারণ পরিষদ নামে পরিচিত। এটিই একমাত্র পরিষদ যেখান জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত সকল রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও প্রতিনিধিত্বের অধিকারী হিসেবে অবস্থান করে। অধিবেশন উপলক্ষ্যে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে এখন থেকেই চলছে সাজ সাজ রব। জাতিসংঘের সদর দপ্তরের চারিদিকে কড়া পুলিশি প্রাহারা বসানো হচ্ছে। কারণ এ সময়ে ছদ্মবেশে গুপ্তচররা থাকে।

তিনি বলেন, বছরে একবারই এই একটি অধিবেশনে বিশ্বের প্রধান প্রধান সমস্যাগুলো উঠে আসে। সমাধানের চেষ্টা করা হয়। আমাদের জন্যেও অধিবেশনটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মিয়ানমারের অসহযোগিতার কারণে দু'দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি সরকারপ্রধানের মাধ্যমে অধিবেশনে উঠে আসতে পারে।

ঝালকাঠি আজকাল