• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ছয় মাসে চা উৎপাদন বেড়েছে ৪৪ শতাংশ

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০১৯  

চলতি বছর দেশের আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চা বাগানগুলোয় চা উৎপাদন বেড়েছে। আর এই উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকলে নয় কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদন হবে বলে চা বোর্ড আশা করছে ।  

চা বোর্ডের সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এই বছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত দেশের ১৬৬টি বাগানে মোট ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৮ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে এই চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৮ হাজার কেজি চা। সে হিসাবে বছরের প্রথমার্ধে চা উৎপাদন বেড়েছে ৪৪ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া চা উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে অনুকূল। অর্থাৎ রাতের বেলা বৃষ্টির পাশাপাশি দিনে খরতাপ থাকলে ভালো মানের কুঁড়ি উৎপাদন হয়। এ বছর বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলেও নিয়মিত বৃষ্টিপাত ও দিনের বেলা রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার কারণে দেশের বাগানগুলোয় ভালো মানের চা উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি চায়ের পরিমাণও বেড়ে গেছে।

হবিগঞ্জের দারাগাঁও চা বাগানের ম্যানেজার ফরিদ আহমদ শাহিন বলেন, অনুকূল পরিবেশ থাকায় চা উৎপাদন বেড়েছে। বছরের প্রথম দিকে চা উৎপাদন কম হলেও এখন তা প্রায় দ্বিগুণ। আর বর্ষা মৌসুমেও ভালো বৃষ্টি হচ্ছে। 

দেশের  চা বাগানগুলোয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ১ লাখ ১৪ হাজার, মার্চে ১৯ লাখ ১৭ হাজার, এপ্রিলে ৬১ লাখ ১০ হাজার, মে মাসে ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার এবং সর্বশেষ জুনে ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৭ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। 
গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ৩ লাখ ৩১ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ হাজার, মার্চে ১৫ লাখ ৫৬ হাজার, মে মাসে ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ও জুনে ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল।

চা বোর্ডের উৎপাদনসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের শেষের ছয় মাসে মোট সাড়ে ছয় কোটি কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। ফলে প্রথম ছয় মাসের উৎপাদন মিলিয়ে নয় কোটি কেজি চা উৎপাদন সম্ভব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ শত  মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের দেশে পরিণত হবে। তখন চা আমদানির পরিবর্তে বাংলাদেশ আবারও রপ্তানিমুখী চায়ের দেশ হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।   

এর আগে চা উৎপাদনের ইতিহাসে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। কিন্তু পরের বছরেই এর উৎপাদন কমে ৭ কোটি ৮০ লাখ কেজিতে দাঁড়ায়। তবে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।

সঠিক সময়ে কীটনাশক ব্যবহার এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চা উৎপাদনে এই সফলতা এসেছে বলে চা-বাগান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ইন্টারন্যাশনাল চা কমিটির তথ্য মতে, চীন এখন চা উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। আর ভারত আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। বিশ্বে চা উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন নবম স্থানে। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ একটানা দশম অবস্থানে ছিল। ইন্টারন্যাশনাল চা কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সামনে চায়ের উৎপাদন দ্বিগুণ করার সুযোগ রয়েছে।

এ দিকে চা গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চা বাগানের জমি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। মাত্র ৫২ ভাগ জমি চা চাষের যোগ্য। বাকি ৪৮ ভাগ জমি পতিত ও চা চাষের জন্য লিজ নিয়ে ভিন্ন খাতে ব্যবহার হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, লিজ নেয়া জমির সঠিক ব্যবহার, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, সঠিক মনিটরিং, কম মূল্যে সার-কীটনাশক সরবরাহ ও ক্লোনিং চা গাছ রোপন করলে উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে।   

পাকিস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ মৌসুমে সাড়ে ৬ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। এ মৌসুমের উৎপাদনে ২০১০ সাল থেকে চা শিল্প নিয়ে যে শঙ্কার তৈরি হয় তা কেটে গেছে। 

চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগানে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের সময় দেশে ১৫০টি চা-বাগান ছিল। তখন দেশে ৩ কোটি কেজির মতো উৎপাদন হতো। 

বর্তমানে দেশে ১৬৬ টি চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারেই ৯২টি চা বাগান রয়েছে। অন্যান্য চা বাগানগুলোর মধ্যে হবিগঞ্জে ২৪টি, সিলেটে ১৯টি, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে ৭টি, রাঙামাটিতে ২টি ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১টি চা বাগান রয়েছে। দেশে এখন মোট চা চাষের জমির পরিমাণ ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ একর।

ঝালকাঠি আজকাল