• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের হামলায় উদ্বাস্তু ৩০ হাজার বাঙালি

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২০  

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী হামলার মুখে একটি গুচ্ছগ্রামের ৮১২টি বাঙালি পরিবারের ৩০ হাজারের বেশি সদস্য চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকারের বন্দোবস্ত দেওয়া জায়গা থেকে বাঙালি পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। তাদের আগের জায়গা ফিরিয়ে দিতে আদালত নির্দেশ দিলেও কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় পুরাতন জায়গায় ফিরিয়ে নিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা।  

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার সোনামিয়া টিলা থেকে উচ্ছেদ হওয়া বাঙালি পরিবারগুলোর চলছে দুর্বিষহ জীবন। পশ্চিম বোয়ালখালী গ্রামের একটি পাহাড়ি টিলার ছোট ছোট ঘিঞ্জি ঘরে থাকতে হচ্ছে পুরো পরিবারকে। অথচ তাদের উচ্ছেদ করা সোনামিয়া টিলা এখন দখল করে রেখেছে পার্বত্য শান্তিুচুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফের অনুসারীরা।

১৯৮৬ সাল থেকেই সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোনামিয়া টিলায় বসবাস শুরু করে বাঙালি পরিবারগুলো। কিন্তু পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর দাপট দেখিয়ে চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ ওই বসতি থেকে বাঙালি পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ শুরু করে।

সেখান থেকে উচ্ছেদ হওয়া বাঙালি পরিবারগুলোর নারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ইউপিডিএফের অনুসারীদের হামলা এখন তারা অনেকটায় আশ্রয়হীন। বসতভিটায়ই এখন তাদের শেষ সম্বল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উচ্ছেদকৃত জায়গা বাঙালি পরিবারগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে ২০১৮ সালে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় পার্বত্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে এখনো সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

সেখাবে বসবাসরত বাঙালি পরিবারগুলো বলছে, কৃষিকাজ করার মতো নেই তাদের নিজস্ব জায়গা। অনেকের নেই আবার থাকার জায়গা। চলাচলের জন্য নেই উপযুক্ত যোগাযোগব্যবস্থা আর শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা সেখানে অপ্রতুল।

৮১২ বাঙালি পরিবারের জন্য যে ৪ হাজার ৬০ একর জমি সরকারিভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল, তা তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন উদ্বাস্তু হওয়া বাঙালিদের।

পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাঙালিদের সেখানে ফিরিয়ে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক। আর পুলিশ বলছে, সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে উচ্ছেদের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।

ভূমি বিরোধ নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তির ফলে, যারা বাইরে ছিলেন তারাও চলে আসছেন। যাদের এখানে বসতি অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সে বলছে এটা তার জমি। আবার আগে চাষাবাদ করত সেও বলছে তার জমি। এগুলো যতক্ষণ না পর্যন্ত নির্ণয় করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভূমির মালিকানা নিয়ে এই জটিলতা শেষ হবে না।

সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে বসতি থেকে উচ্ছেদের ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার আজিজ আহমেদ বলেন, আঞ্চলিক যে গ্রুপগুলোর রয়েছে, সেগুলোর মধ্যেই যে ঘটনাটি ঘটেছে (হামলার মাধ্যমে উচ্ছেদ) সে বিষয়ে একটা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন সেটা তদন্তনাধীন রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ৫ নম্বর বাবুছড়া ইউনিয়ন থেকে বাঙালি পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পর দখলদারিত্ব বজায় রাখতে সেখানকার নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি রাস্তার পাশে ধর্মীয় স্থাপনা তৈরি করছে ইউপিডিএফ নেতা প্রসীত খিসার অনুসারীরা।

ঝালকাঠি আজকাল