• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

শীতকাল কেন মুমিন বান্দার কাছে বেশি প্রিয়?

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২২  

মুমিনের জন্য সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসে শীতকাল। শীতকাল এলেই নেককার মুমিনগণ খুবই আনন্দিত হয়। অন্য ঋতুগুলোর চেয়ে শীতকালে মুমিন বান্দার কাছে বেশি প্রিয়। কিন্তু কেন? এমন কী কারণ আছে যে, মুমিন বান্দা শীতকাল এলে আনন্দিত হয়?

হ্যাঁ, শীতকাল মুমিনের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। কেননা ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল এই শীত। শীতকাল এলে অনেকে শীতের পোশাক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়; কেউ ত্বকের যত্নে ব্যস্ত। কেউ আবার শীতকালীন মজার মজার খাবার রেসিপি পেছনে ছুটে। কিন্তু মুমিন বান্দা শীতকাল এলেই আনন্দিত হয়।

কারণ এই শীতে মুমিন বান্দা ইবাদত-বন্দেগির জন্য প্রচুর সময় পায়। সওয়াব অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ মেলে। শীতের রাত অনেক বড় হয়। আর দিন হয় অনেক ছোট। তাই রাতে দীর্ঘ সময় ধরে ঘরে ভেতর নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও ইবাদত-বন্দেগিতে পার করে দেয়। আর ছোট দিনটি রোজার রাখার মাধ্যমে অনায়েসে কাটিয়ে দেয়।

এসব কারণেই মুমিন বান্দা শীতকালকে স্বাগত জানায়। যেভাবে সাহাবায়ে কেরামও শীতকালকে স্বাগতম জানাতো। শীতকাল নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে এবং ইসলামিক স্কলারদের কাছ থেকে কথা এসেছে-

১. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘শীতকালকে স্বাগতম । কেননা শীতকালে বরকত নাজিল হয়। আল্লাহর সামনে নামাজে দাঁড়ানোর জন্য রাত অনেক দীর্ঘ হয় এবং নফল রোজা রাখার জন দিন হয় অনেক ছোট।’

২. হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘শীত হচ্ছে বান্দার জন্য গনিমত।’

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে সহজ গনিমত সম্পর্কে জানিয়ে দেব না ? লোকেরা বলল- ‘হ্যাঁ’, আমাদেরকে তা জানিয়ে দিন | এরপর তিনি তাদের বললেন তা হচ্ছে- শীতের রোজা।’

৪. হজরত হাসান বসরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘শীতকাল মুমিনের জন্য চমৎকার সময়। শীতকালে রাত অনেক দীর্ঘ হয়। তাতে মুমিন বান্দা আল্লাহর সামনে (নামাজে) দাঁড়াতে পারে । আর দিন অনেক ছোট হয়। তাতে সে নফল সিয়াম পালন করতে পারে।’

৫. হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদ-এ এসেছে, ‘শীতকালের রোজা হচ্ছে সহজে অর্জিত হওয়া গনিমতের (মালের) মতো।’

৬. হাদিসে পাকে আরও এসেছে, ‘শীতকাল হচ্ছে মুমিনের জন্য বসন্তকাল।’

যুগে যুগে মুমিন মুসলমান পরকালীন পাথেয় সঞ্চয়ে ছিলেন সচেতন। তাইতো তারা শীতকালকে সহজে অর্জিত গণিমতের মালের মতো মনে করে দিনের বেলা রোজা রাখতো। রাতভর ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতে কাটিয়ে দিতো।

শীতের কষ্টকে উপেক্ষা করে রাতের দীর্ঘ সময় তারা আপন রবের সামনে নামাজে দাঁড়িয়ে আবেগমাখা সুললিত কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করতেন । আর দিন ছোট হওয়ার কারণে শীতকালের বেশির ভাগ সময় তারা নফল রোজা পালনে কাটিয়ে দিতেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের করণীয় হলো- শীতকালের মতো এ সহজ গণিমতের ব্যাপারে উদাসিন না থেকে রাতের নামাজ ও দিনের রোজা পালনে এগিয়ে আসা জরুরি। আর তাতেই অর্জিত হবে পরকালের পাথেয়। আল্লাহর কাছে তেরি হবে সর্বোত্তম মর্যাদা।

আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে শীতকালে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। শীতকালকে নেক আমলের বসন্তকালে পরিণত করে দিন। আমিন।

ঝালকাঠি আজকাল