• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

করোনায় করণীয় : মহামারির ব্যাপারে মহানবির বক্তব্য

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২০  

 

করোনার মতো ভয়াবহ রোগ পৃথিবীতে নতুন নয়; ইসলামের সূচনালগ্নেও এ ধরনের মহামারি বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহামারির সময় মুসলিমদের করণীয় কী হবে তা বলে গেছেন। নবিজির সাহাবিগণ সেই নির্দেশনা পালন করে সুফলও পেয়েছেন। তা ছাড়া এ রোগের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি সত্য, কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য কোনো রোগ নিরাময় অসাধ্য কিছু নয়। রোগব্যাধি তিনিই দেন এবং তিনিই নিরাময় দান করেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আমি অসুস্থ হই তখন তিনিই আমাকে সুস্থতা দান করেন।’ (সুরা শুআরা :৮০) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, তিনি রোগব্যাধি দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন। ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, তোমাদের জান-মাল ও ফসলাদির ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে; ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও!’ (সুরা বাকারা :১৫৫)

এখন প্রশ্ন ওঠে যে, আল্লাহ এমন মহামারির পরীক্ষায় আমাদের কেন ফেললেন? প্রথমত, এভাবে কারা ঈমানের ওপর অবিচল থাকে তা তিনি দেখতে চান, বিশ্বাসীদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে চান। দ্বিতীয়ত, এসব বিপর্যয়ের কারণ আদতে মানুষ নিজেই। মহান রব বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের জন্য জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি আস্বাদন করানো হয়, যেন তারা সৎপথে ফিরে আসে।’ (সুরা রূম :৪১)

সহিহ হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন মহামারি দেখা দেয়; যখন ওজন ও পরিমাপে কারচুপি হয়, তখন দুর্ভিক্ষ নামে এবং যখন জাকাত আদায় করা না হয় তখন অনাবৃষ্টি হয়।’ (ইবনে মাজাহ :৪০১৯)

মহামারির সময় ইসলামের নির্দেশনা

এক.

অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করা। ঈমানের ওপর অবিচল থাকা।

দুই.

আক্রান্ত অঞ্চলে যাতায়াত না করা। মহানবি (সা.) বলেছেন, কোনো অঞ্চলে প্লেগের (বা অন্য কোনো মহামারির) সংবাদ শুনলে সেখানে প্রবেশ করো না। আর তা তোমাদের অবস্থানে ছড়ালে সেখান থেকে বেরিয়ে যেও না।’ (সহিহ বুখারি :৫২০৪)

তিন.

সংক্রমণের ভয় হলে জনসমাগম এড়িয়ে চলা। নবিজি (সা.) ইরশাদ করেছেন- ‘কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাকো, যেভাবে বাঘ থেকে দূরে থাকো।’ (সহিহ বুখারি :৫৭০৭) অন্যদিকে ‘ইসলামে সংক্রমণ বলতে কিছু নেই’ বলে যে উক্তি রয়েছে, তার অর্থ: গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে সৃষ্ট সংক্রমণ ও স্বয়ংসক্ষম সংক্রমণ বলে কিছু নেই। অর্থাৎ গ্রহ-নক্ষত্র বা রোগের নিজস্ব ক্ষমতা নেই। ‘নবিজি সফরে বৃষ্টি বা শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলতেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বলতেন যে, ‘তোমরা আবাসস্থলেই নামাজ আদায় করে নাও!’ (সহিহ বুখারি :৫৭২৯)

চার.

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। মহানবি (সা.) বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অর্ধেক’ (সহিহ মুসলিম :২২৩)। সম্প্রতি ইউনিসেফ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে মেলামেশা না করা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায়।

পাঁচ.

রোগ থেকে বেঁচে থাকার জন্য দোয়া পড়া। বিশুদ্ধ হাদিসে এ সময় পাঠ্য একটি দুয়া রয়েছে। তা হলো- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাছি ওয়াল জুনুনি ওয়াল জুযামি ওয়ামিন সায়্যিল আসক্বাম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি শ্বেত রোগ, উন্মাদনা, কুষ্ঠরোগ এবং দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই।’ (আবু দাউদ :১৫৪৯)

করোনা ভাইরাসের মত বিপর্যয় থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রতিষেধক আবিষ্কার থেকে শুরু করে মহামারি মোকাবিলায় সবাইকে সর্বাত্মক উদ্যোগী হতে হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- ‘আমি কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করি না, যতক্ষণ না তারা নিজে নিজের অবস্থা পরিবর্তন করে।’ (সুরা রা’দ :১১)

দয়াময় প্রভু আমাদের সবাইকে মহামারি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

ঝালকাঠি আজকাল