• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

চালকদের প্রতি ইসলামের নির্দেশনা

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯  

জীবনের তাগিদে মানুষকে সফর করতে হয়। প্রতিদিন ছুটতে হয় আপন আপন গন্তব্যে। ব্যবহার করতে হয় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। কখনো কখনো নিজেকেই থাকতে হয় চালকের ভূমিকায়। একজন চালকের জন্য যেমন নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক, তেমনি যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াও তারই দায়িত্ব। তাই নিজের ও যাত্রীদের জন্য বিপজ্জনক কোনো কাজ করা চালকের জন্য জায়েজ হবে না। নিম্নে ইসলামের দৃষ্টিতে এমন কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো। যা থেকে বিরত থাকা একজন চালকের জন্য আবশ্যক।

অনিয়ন্ত্রিত গতিতে যানবাহন চালানো
অনিয়ন্ত্রিত ক্ষিপ্র গতির কারণে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। বিশেষ করে মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে এটি ভীষণ বিপজ্জনক।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক শামসুল আলম বলছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মোটরসাইকেল একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন। চার চাকার বাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি।

উঠতি বয়সী রাইডাররা রাস্তা ফাঁকা পেলেই দ্রুতগতিতে বাইক চালাতে পছন্দ করে। অনেকে আবার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ব্যস্ত রাস্তাতেই প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়। মহাসড়কে পাল্লা দেয় দূরপাল্লার গাড়ি চালকরা। এটি মানুষের জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এভাবে নিজেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(তোমরা) নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ কোরো না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৯৫) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে হত্যা কোরো না।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯) বেপরোয়া যানবাহন চালানো যেমন নিজের জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়, তেমনি অন্যের জীবনও কেড়ে নিতে পারে। তাই অনিয়ন্ত্রিতভাবে যানবাহন চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে যেখানে-সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ স্ট্যান্ড দেওয়ার চেষ্টা করা যাবে না।

হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো
মোটরসাইকেল চালানোর সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য হেলমেট ব্যবহার করা আবশ্যক। শুধু চালকই নয়, তার পেছনের মানুষটির জন্যও হেলমেট পরা জরুরি। হেলমেট ব্যবহার না করলে মামলা হবে ১৪৯ ধারায়। আমাদের প্রিয় নবী (সা.)ও মক্কা বিজয়ের সময় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেছেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৮৫) যদিও প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল, কিন্তু নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করলে বিষয়টিকে ভিন্ন ভাবার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, প্রাণীর ছবি ও শয়তানি চিহ্নসংবলিত হেলমেট ব্যবহার করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ নেই।

ফুটপাতে বাইক
অনেকেই জ্যামের কারণে সময় বাঁচাতে ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেন। এতে পথচারীরা বিরক্ত হয় এবং কষ্ট পায়। এভাবে মানুষকে কষ্ট দেওয়া প্রিয় নবীর আদর্শ নয়। রাসুল (সা.) কখনো রাতের বেলায় মসজিদে গেলে এমনভাবে সালাম দিতেন, যাতে ঘুমন্ত ব্যক্তির ঘুম না ভাঙে এবং জাগ্রতরাও শুনতে পায়। (মুসলিম, হাদিস : ৫২৫৭)। তা ছাড়া ফুটপাতে বাইক চালানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ফুটপাতে বাইক চালালে ট্রাফিক আইনে ১৩৭ ধারায় মামলা ও বিভিন্ন পরিমাণের অর্থমূল্যের জরিমানা আছে।

ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে তা থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়, যা পথচারীদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। অনেকে বিশেষ সাইলেন্সার লাগিয়ে বিকট আওয়াজ করে মানুষকে কষ্ট দিয়ে থাকে। যা শব্দদূষণ করে। এটি অনুচিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেউ অপরের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতি করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)। এভাবে চলাফেরার কারণে পুলিশের মামলার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা সম্মানহানিকর।

কারো সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করা
অনেক সময় রাস্তায় গাড়ি বা মোটরবাইক চালাতে গেলে অনেকেই ভুল করে বসে। যা থেকে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। শুরু হয় বাগিবতণ্ডা। এ ক্ষেত্রে মানুষের সঙ্গে রূঢ় আচরণ না করে নিজেকে সংযত রাখা উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, সদকা করায় সম্পদের হ্রাস হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা সমুন্নত করে দেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮৬)। তাই রাস্তায় কেউ ভুল করে বসলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।

ঝালকাঠি আজকাল