• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

রাজাপুর হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২১  

রাজাপুর প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির রাজাপুর থানা ১৯৭১ সালের ২৩ নভেম্বর হানাদার মুক্ত হয়। ওইদিনের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও হোসেন আলী নামের স্থানীয় দুই মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়াও সম্মুখযুদ্ধে আহত হয়েছিলেন কমপক্ষে বিশজন মুক্তিযোদ্ধা। তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধে রাজাপুর থানা কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন কেরামত আলী আজাদ। মুক্তিযুদ্ধে সারা দেশকে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।

রাজাপুর থানা ছিল বরিশাল সাব সেক্টরের অধীনে।  সাব সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমর।  উপজেলার কানুদাসকাঠিতে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি তৈরি করেন।  রাজাপুর থানায় সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হলে তিনিও এ যুদ্ধে অংশ নেন এবং সে দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ৯ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম)।  মুক্তিযোদ্ধাদের অসিম সাহসিকতার ফলে এ অঞ্চলের মধ্যে সর্বপ্রথম শত্রুমুক্ত হয়েছিল রাজাপুর। দেড়যুগ ধরে প্রতি বছর এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে রাজাপুর প্রেসক্লব।

রাজাপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে রাজাপুর প্রেসক্লাব এবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় (২৩ নভেম্বর ) মঙ্গলবার দুপুর ১.০০টায় ৩০ নং রাজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে "গল্পে গল্পে শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ " শীর্ষক শিরোনামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান এর সভাপতিত্বে অতিথিরা বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে রাজাপুর পাক হানাদার মুক্ত হওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্বরোচিত কবিতা পাঠ করে শোনান। এসময়ে বক্তব্য দেন রাজাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আঃ বারেক ফরাজী, নির্বাহী সদস্য কামরুল হাসান রানা প্রমূখ। 

উল্লেক্ষ্য ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমন চালায়, শুরু হয় গুলি-পাল্টা গুলি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাতভর যুদ্ধের পরে হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ২৩ নভেম্বর সকালের দিকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এতে বরিশাল বিভাগের ৯নং সেক্টরের মধ্যে ঝালকাঠির রাজাপুর থানা সর্বপ্রথম পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। ৯নং সেক্টরের মধ্যে সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয় রাজাপুরে। দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে উপজেলা সদরে নবনির্মিত স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ অর্পন ও সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার থানা ঘাটের বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজাপুরে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করা হয়। সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপটেন শাহজাহান ওমরের বাড়ির সামনের বধ্যভূমিতে আরও প্রায় ২০০ লোককে হত্যা করা হয়। এছাড়াও শুক্তাগড় ইউনিয়নের কাঠিপাড়ায় ২০১০ সালে দুইটি গণকবর পাওয়া যায়। যার একটি থেকে অনেক মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার হয় এবং সাতুরিয়ার তারাবুনিয়া গ্রামে একটি (অখননকৃত) গণকবরের সন্ধান দেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
 

ঝালকাঠি আজকাল