• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

নির্বাচন কমিশনের হারানো ল্যাপটপেই তৈরি হচ্ছে রোহিঙ্গাদের এনআইডি!

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হারিয়ে যাওয়া একটি ল্যাপটপ থেকেই রোহিঙ্গাদের ভুয়া এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশনের) কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে তারা কিছু তথ্য পেয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে বিশেষ ওই ল্যাপটপটি হারিয়ে যায়। যা ভোটার তালিকা তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। অথচ বিশেষ ওই ল্যাপটপ হারানোর ব্যাপারে ইসির স্থানীয় কর্মকর্তারা জিডি পর্যন্ত করেননি।

জানা গেছে, এনআইডির সার্ভারে সন্দেহজনক বিভিন্ন ভোটার তথ্য নিবন্ধনের পর দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দীনের নেতৃত্বে একটি দল গত রোববার তদন্ত করতে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিস পরিদর্শন করে। এর পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইসি কর্মকর্তা ও স্থানীয় কিছু নেতার যোগসাজশেই রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় দেওয়ার মতো অনিয়ম ঘটানো হচ্ছে। কারণ নির্ধারিত কিছু কম্পিউটারের মাধ্যমেই শুধু এনআইডির তথ্য সার্ভারে নিবন্ধন করা যায়।

দুদকের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন অফিসের একটি বিশেষ ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। অথচ এ ব্যাপারে ইসি কর্মকর্তারা কোনো জিডি পর্যন্ত করেননি। বিশেষ ওই ল্যাপটপটির আলাদা আইপি ঠিকানাসহ এনআইডির সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ছিল। এমনকি ইসি কর্মকর্তাদের কাছে হারিয়ে যাওয়া ল্যাপটপটির সম্পর্কে কোনো তথ্যই নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এনআইডি বানাতে সক্ষম হয়েছে এমন ১৫৪ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আমাদের দিয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে, রোহিঙ্গাদের এনআইডি পেতে যারা সহায়তা করেছে তাদের আমরা খুঁজছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইসি কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় নেতাদের এ কাজে যোগসাজশ রয়েছে।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনির হোসেন খান বলেন, ‘দুদকের কর্মকর্তারা দুইবার নির্বাচন অফিসে এসেছেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা বৈধ কাগজের ভিত্তিতেই লোকজনকে ভোটার হিসেবে নথিবদ্ধ করেছি। তবে পরিচয় গোপন করে এনআইডি পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় জননেতাদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।’

হারানো ল্যাপটপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি অফিসে যোগদানের আগেই এ ঘটনা ঘটে। যাই হোক, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে তিন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ গ্রেপ্তার করে আকবার শাহ থানা পুলিশ। যারা নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিস থেকে এক দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট বানানোর কথা স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া ওই দিনই চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে পরিচয় গোপন করে পাসপোর্ট বানানোর চেষ্টার সময় এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করা হয়। এর পরই বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে।

সোমবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম হুঁশিয়ার করে বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কোনো ব্যক্তিকে ভোটার করা বা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার সঙ্গে কারো সম্পৃক্ততা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঝালকাঠি আজকাল