• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৪  

বছর ঘুরে আবারও উপস্থিত মহিমান্বিত মাহে রমজান। যে মাসে অবতীর্ণ হয়েছে আল কোরআন। পবিত্র কোরআনে যে মাস সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি হলো তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জনের মাস। ‘তাকওয়া’ এটি আরবি শব্দ যার অর্থ হলো — বিরত থাকা, পরহেজ করা। এছাড়া আল্লাহ তাআ’লার ভয়, ধার্মিকতা বা দীনদারি অর্থেও এটি ব্যবহার হয়।

আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো। তথা, আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারো।’ –সুরা বাকারা : ১৮৩

আল্লাহ তাআ’লার নৈকট্যলাভ এবং গুনাহমুক্ত জীবন গড়ার জন্য তাকওয়া অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। তথা আল্লাহর ভয় এবং পরকালীন শাস্তি ও জবাবদিহিতা থেকে বাঁচতে, তাকওয়া –আল্লাহভীতি অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে। যাবতীয় অন্যায় অনাচার ও পাপকাজ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে পারে।
যেমন, অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা করা। খুন ছিনতাই লুটতরাজ করা। মানুষের হক নষ্ট করা। টাকা পয়সা আত্মসাৎ করা। কারও প্রতি জুলম অত্যাচার করা। অন্যায়ভাবে কারও সম্পদ গ্রাস করা। জায়গা জমি দখল করা। ওজনে কম দেয়া ইত্যাদি।

এ জাতীয় অন্যায় কাজ কোনো একজন মানুষ তখনই করতে পারে, যখন তার মধ্যে আল্লাহর কোনো ভয় থাকে না। পরকালে শাস্তির ভয় থাকে না। থাকে না কোনো প্রকারের জবাবদিহিতা। একমাত্র তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয়ই পারে একজন মানুষকে যাবতীয় অন্যায় অনাচার থেকে বিরত রাখতে।  

আর রমজান হলো এই তাকওয়া অর্জন তথা আল্লাহভীতি অর্জনের মাস। একজন রোজাদার রোজা রাখেন আল্লাহর জন্য। একজন রোজাদার নিজেকে খাওয়া পান করা এবং জৈবিক চাহিদা থেকে বিরত রেখে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনাহারে থাকেন আল্লাহর বিধান রোজা রাখার জন্য। হাদিসে কুদসিতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তাআ’লা বলেন– আদম সন্তানের প্রতিটি আমল তার জন্য। তবে রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। আর রোজা আমার জন্য এবং আমি তার প্রতিদান দেব।’ – সহীহ বুখারি  : ১৮০৫

তাই আমাদের জন্য করণীয় হলো, আমরা নিজেরা রমজানের সবগুলো রোজা রাখব। অন্যদেরকে রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করব। অবশ্যই আল্লাহ তাআ’লা আমাদেরকে এর বিনিময় দান করবেন। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে।’ –সুরা বাকারা  : ১৮৫

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘যখন তোমরা (রমজানের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা রাখবে। আর যখন (শাওয়ালের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা বন্ধ করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে।’ সহীহ বুখারি, হাদীস : ১৯০৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১০৮০

রমাজানে রোযা রাখার বিশেষ আরও একটি ফায়দা হচ্ছে এতে গুনাহ মাফের ঘোষণা রয়েছে। হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান অবস্থায় এবং পুণ্যের আশায় রমজানে রোজা রাখবে; তার পেছনের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ – সহীহ বুখারি : ১৯১০
আল্লাহ তাআ’লা আমাদেরকে মাহে রমজানের গুরুত্ব অনুধাবন করে তাকওয়া অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করুন। আমিন।

ঝালকাঠি আজকাল