• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:

আরো ২০ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় বই প্রণয়নের পরিকল্পনা

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২০  

 


চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সাদ্রিসহ মোট ২০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় বই প্রণয়নের পরিকল্পনা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার জন্য বই বিতরণ করে আসছে সরকার। বর্তমানে পাঁচ ভাষায় বই বিতরণ করা হচ্ছে। তবে এর আকার সামনে আরো বাড়ানো হবে।

জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার জন্য বই বিতরণ শুরু করে সরকার। বর্তমানে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, এবং সাদ্রি এই পাঁচ ভাষায় বই বিতরণ করা হচ্ছে।

২০১৭ সালে প্রথমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা প্রাক-প্রাথমিক বই পায়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণি, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় শ্রেণির মাতৃভাষায় বই বিতরণ করে সরকার। তবে এবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও মাতৃভাষায় লেখা বই পায়।

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, আমাদের মোট ১৯ থেকে ২০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্য বই প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অনেকেই এসব ভাষা বলতে পারে, কিন্তু লিখতে পারে না। ফলে আমরা সঠিক বর্ণ খুঁজে পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সহায়তাও নিচ্ছি। আমরা ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছি।

এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলের উপজাতিদের কথা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠীর জন্য স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর কথা ভাবছে সরকার। শুরুতে প্রাক-প্রাথমিক এবং পরে প্রাথমিক স্তরে এ কার্যক্রম শুরু হবে। পরিমার্জিত শিক্ষা আইন-২০১৯ এর খসড়ায় এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কয়েকটি নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা নিজ মাতৃভাষার পাঠ্যবই পেলেও বেশ কিছু নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা তা এখনো পায়না। আবার নিজ ভাষার পাঠ্যবই পেলেও হাতে-কলমে শেখানোর মতো প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা তা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারছে না।

এসব বিষয় বিবেচনা করেই উপজাতিদের জন্য স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। শিক্ষা আইনের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের ২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকার ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পর্যায়ক্রমে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করবে।

এছাড়া প্রস্তাবিত আইনে অনগ্রসর এলাকা বা অঞ্চলের বিষয়েও সরকারের চিন্তাভাবনার কথা বলা হয়েছে। আইনের ৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, অনগ্রসর এলাকা বা অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যথাযথ যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।

৩ নম্বর ধারায় বলা হয়, উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠি শিশুদের শিখন-চাহিদা অনুসারে অতিরিক্ত পাঠ্যপুস্তক সংযুক্ত করা যাবে। আর ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সব শিশুর জন্য বৈষম্যহীন শিক্ষাক্রম প্রণীত হবে। যাতে লিঙ্গ, ভাষা, বর্ণ, ধর্ম, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধিতা অথবা অন্য কোন কারণে শিশুর প্রতি কোনরূপ বৈষম্য না করা হয়।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল বাহাদুর ছেত্রী বলেন, মাতৃভাষায় বই দেয়া সরকারের অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর শিশুরা নিজেদের ভাষাকে রক্ষা করতে পারবে।

ঝালকাঠি আজকাল