• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

ইসলামে সন্দেহ গর্হিত কাজ

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২১  

কারো কথা শোনা মাত্রই অন্যের বিষয়ে সন্দেহ করা বা মন্দ ধারণা এক গর্হিত বিষয়। যাচাই না করে সন্দেহ করা বা অহেতুক মন্দ ধারণা করার কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। সমাজের একতা ও ভ্রাতৃত্ব  বন্ধন  ভেঙ্গে পড়ে। তখন ভাইয়ে ভাইয়ে দূরত্ব ও হানাহানি শুরু হয়। তাই, হাদিস শরীফে কারো ব্যাপারে মন্দ ধারণা করা বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘শেষ যুগে কিছুসংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। তারা তোমাদের কাছে এমন সব অলীক কথাবার্তা উপস্থিত করবে, যা না তোমরা শুনেছ, না তোমাদের বাপ-দাদা শুনেছে। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে বেঁচে থাকো এবং তাদের তোমাদের থেকে বাঁচাও। অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকো, যাতে তোমাদের পথভ্রষ্ট করতে না পারে এবং তোমাদের বিপথগামী করতে না পারে।’ (মুসলিম, মিশকাত, হাদিস : ১৫৪)

জাহেলি যুগের মানুষদের অন্যায় ধারণার নিন্দা করা হয়েছে। শরিয়তে এ ধরনের অন্যায় ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে অবিশ্বাসীদের উদ্ভট চিন্তাধারার সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা আল্লাহ সম্পর্কে জাহেলি ধারণার ন্যায় অসত্য ধারণা পোষণ করছিল।’ (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৪)

উদ্ভট ধারণা নিয়ে চলা, মানুষকে অহেতুক সন্দেহ করা নিন্দনীয় কাজ। পবিত্র কোরআনের অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)

তাই অনুমান করে ছেলেধরা সন্দেহে কেউ প্রকৃতপক্ষে ছেলেধরা হলেও তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া উচিত। কারণ এই একটি গুজব সম্প্রতি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের। কেউ কি ফিরিয়ে আনতে পারবে বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত তুবার মাকে? দুনিয়ার সব কিছু দিয়েও তো তার মায়ের অভাব পূরণ করা সম্ভব হবে না। তাই কিছু শুনলেই তা যাচাই না করে ছড়িয়ে দেয়া উচিত নয়। কখনো কখনো এর জন্য চরম মূল্য দিতে হয় গোটা জাতিকে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সব শোনা কথা প্রচার ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯২)

স্রেফ সন্দেহের ভিত্তিতে তাছলিমা বেগম রেনুকে হত্যার পর জাতি লজ্জিত। কিন্তু এমন জঘন্য কাজ কেন করব, যার জন্য লজ্জিত হতে হয়? কেউ ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে আমরা তাকে উদ্ধার না করেই উল্টো পথে পালাতে থাকি, আর ভিত্তিহীন কথা বিশ্বাস করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করে ফেলি। এ কেমন মানবতা?

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের কাছে যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তা যাচাই করো। অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে আক্রান্ত করার আগেই, (না হলে) তোমরা কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সূরা: হুজুরাত, আয়াত: ৬)

অনর্থক কাজে আত্মনিয়োগ করা, না জেনে শুধু শুধু নিরপরাধ মানুষের ওপর অপবাদ দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। হজরত ওবাদা ইবনু সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী (সা.)-কে ঘিরে একদল সাহাবি বসে ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি তাঁদের উদ্দেশ করে বললেন, আমার হাতে এ কথার বাইয়াত গ্রহণ করো যে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার (জিনা) করবে না, নিজেদের সন্তানাদি (অভাবের দরুন) হত্যা করবে না। কারো প্রতি (জিনার) মিথ্যা অপবাদ দেবে না। শরিয়তসম্মত কোনো বিষয়ে অবাধ্য হবে না।

তোমাদের মধ্যে যারা এসব অঙ্গীকার পূর্ণ করতে পারবে, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে পুরস্কার রয়েছে। অন্যদিকে যে লোক (শিরক ব্যতীত) অন্য কোনো অপরাধ করবে এবং এ জন্য দুনিয়ায় শাস্তি পেয়ে যাবে তাহলে এই শাস্তি তার গুনাহ মাফ হওয়ার কাফফারা হয়ে যাবে। আর যদি কোনো গুনাহর কাজ করে, অথচ আল্লাহ তা ঢেকে রাখেন (বা ধরা না পড়ে), এ জন্য দুনিয়ায় এর কোনো বিচার না হয়ে থাকে, তাহলে এই কাজ আল্লাহর মর্জির ওপর নির্ভর করবে। তিনি ইচ্ছা করলে আখিরাতে তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন অথবা শাস্তিও দিতে পারেন। বর্ণনাকারী (ওবায়দা) বলেন, আমরা এসব শর্তানুযায়ী নবী (সা.)-এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করলাম। (বুখারি, হাদিস : ১৮) 

ঝালকাঠি আজকাল