• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

সরকার উৎখাতের নীল নকশা ফাঁস, নেপথ্যে বার্গম্যান-তাসনিম খলিল

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২১  

বেশ আগে থেকেই ‘নেত্র নিউজ’ এর সম্পাদক তাসনিম খলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল- তিনি বিদেশিদের টাকায় অনলাইনে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ও গুজব ছড়াচ্ছেন। কিন্তু এতদিন তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিলেন। অবশেষে নিজের মুখেই জানালেন কার টাকায় তিনি নিজের সম্পাদিত আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়েবসাইট ‘নেত্র নিউজ’ চালাচ্ছেন।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হককে অনলাইনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘নেত্র নিউজ’ এর আদ্যোপান্ত জানান তাসনিম খলিল। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি সংস্থা এনইডি এর অর্থায়নে ২০১৯ সালে ‘নেত্র নিউজ’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি পত্রিকাটি চালান। এরপর থেকে এটি পরিচালনার সার্বিক খরচ দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) প্রতিষ্ঠানটি।

তাসনিম খলিলের দাবি, বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এনইডি বিশ্বব্যাপী এই অর্থায়ন করে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনইডি মূলত বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে নীল নকশা বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের হয়ে কাজ করে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি দেশের সরকার পরিবর্তন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যেখানে বাংলাদেশের হয়ে মার্কিনিদের সাথে কাজ করছেন তাসনিম খলিল।

মূলত গত নির্বাচন থেকে দেশের হয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। তখন থেকে এর পেছনে কাজ করেছেন বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল হোসেনের ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত জামাতা ডেভিড বার্গম্যান। তবে, এমন অপসাংবাদিকতার কারণে বাংলাদেশের দুটি গণমাধ্যম থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন বার্গম্যান। পরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিকৃতির দায়ে আদালতে সাজাও পান এই ব্রিটিশ।

এনইডি যেভাবে কাজ করে

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক জেফরি টি রিচেলসনের বই থেকে জানা যায়, এনইডি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার একটি আন্ডারকাভার প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে কোনো দেশের কোনো গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে কোনো দেশের সরকারকে কৌশলে উৎখাত করার পটভূমি তৈরির কাজ করে এনইডি।

এজন্য তারা ওইসব দেশের স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজস করে বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই দেশ ও সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে চাপ সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই দেশের ভাবমূর্তি খারাপ হয়ে যায়। দেশের অভ্যন্তরেও নৈরাজ্য বৃদ্ধি পায়। এভাবেই এজেন্ড সেট করে সুযোগ বুঝে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে কোনো দেশের সরকারের পতন ঘটায় মার্কিন গোয়েন্দারা।

তাদের কাজের ধরনের সাথে বাংলাদেশে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের মিল খুঁজে পেয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা। তাদের মতে, ওইসময় তারা ব্যর্থ হয়। কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়নি। এখনও উগ্রবাদীদের মাধ্যমে সেই পটভূমি তৈরির কাজ চলছে।

গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিনিদের ষড়যন্ত্রের ইতিহাস খুবই জঘন্য। পরিকল্পিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে দিতে মার্কিন গোয়েন্দাদের ন্যাক্কারজনক ভূমিকাও ভুলে যাওয়ার মতো নয়। সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো পরিবারকে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করা হয়। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশ থাকায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।

তারা বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার অর্থায়নেই পরিচালিত হয় ‘এনইডি’। এই প্রতিষ্ঠানটি তাসনিম খলিলের নেত্র নিউজের খরচ দেয় এবং নেত্র নিউজের মাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালায়।

জানা যায়, এজেন্সি ফর ইন্টারনাশনাল ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে ১৯৯৫ সাল থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই বেসরকারি সংস্থার পুরো খরচ বহন করছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের দেওয়া অর্থই আনুষ্ঠানিকভাবে ডোনেশন হিসেবে বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দিচ্ছে ‘এনইডি, যাদের মাধ্যমে তারা ওই দেশগুলোতে সরকারবিরোধী প্রচারণার অপারেশন চালাচ্ছে।

এদিকে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরাজয়ের পর বাংলাদেশের সরকারকেও বদলানোর ষড়যন্ত্র করা হয়। এ জন্য তারা ইউক্রেনের ইউরো-ময়দান স্টাইলে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অনুসারে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে গুজব ও অপপ্রচার ছড়িয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত ও বিক্ষুব্ধ করে তোলার অব্যাহত চেষ্টা চলে।

মূলত মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত এনইডি নামের এই বেসরকারি সংস্থাটি মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ছদ্মবেশে বিভিন্ন দেশের সরকার বদলের নীল নকশা বাস্তবায়ন করে। বাংলাদেশের সরকার বদলানোর গ্রাউন্ড তৈরির জন্য এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশান নামক একটি প্রতিষ্ঠানেও মার্কেন গোয়েন্দারা অর্থায়ন করেছে। এ কারণে গত নির্বাচনের সময় বিদেশি পর্যবেক্ষদের বিভিন্নভাবে সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে তারা।

শুধু আন্ডারগ্রাউন্ড নিউজ পেপারে গুজব ছড়িয়েই থেমে নেই ষড়যন্ত্রকারীরা। এই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী চক্রের সঙ্গে মিলে ইউটিউবার কনক সারোয়ার, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শহীদ উদ্দীন খান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার, শহীদুল আলম, মাহমুদুর রহমানরাও ইউক্রেনের ইউরো-ময়দান স্টাইলের প্রচারণা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে অনলাইনজুড়ে সরকারবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

ঝালকাঠি আজকাল