• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর চার খুনির ‘বীরত্বের’ খেতাব বাতিল চেয়ে রিট

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২০  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চার খুনির মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের খেতাব বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বুধবার (২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাসের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল কাউয়ুম খান এ রিট দায়ের করেন।

রিটে বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত নূর চৌধুরী, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত শরিফুল হক ডালিম ও রাশেদ চৌধুরী এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মোসলেম উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল চাওয়া হয়েছে। রিটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও এই চার আসামিকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালে ৭ জনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীরউত্তম, ১৭৫ জনকে বীরবিক্রম ও ৪২৬ জনকে বীরপ্রতীক উপাধি দেয়া হয়। একই সালের ১৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হয়। এর মধ্যে নুর চৌধুরী বীরবিক্রম, শরিফুল হক ডালিম বীরউত্তম এবং রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনকে বীরপ্রতীক খেতাব দেয়া হয়।

আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডিত এ চার আসামির খেতাব বাতিলে এক ও দুই নম্বর বিবাদীর নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের অব্যাহত থাকা এই খেতাব ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম খেতাব কেড়ে নেয়ার নজির আছে। যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের নজির আবেদনে বলেছি। বাংলাদেশেও নজির আছে।

রিট আবেদনের যুক্তি তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, সাজাপ্রাপ্তদের সম্মানজনক পদক থাকার আইনগত কোনো ভিত্তি নাই। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ভারত, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাজাপ্রাপ্তদের সম্মানজনক খেতাব কেড়ে নেয়া হয়েছে। আবেদনে এসব দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছি। শুধু অভিযোগ আসাতেই মিয়ানমারের অং সাং সু চির পদক কেড়ে নেয়া হয়েছে। এ কারণে বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও সম্মানজনক খেতাব প্রত্যাহারের জন্য আবেদনে উল্লেখ করেছি।

এই আইনজীবী জানান, তাদের খেতাব বাতিলে গত আগস্ট মাসে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিশের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তাই এই রিট আবেদন করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ওই চার খুনির মধ্যে নূর চৌধুরী আছেন কানাডায়। রাশেদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। মোসলেম উদ্দিন ভারতে আছেন বলে ধারণা করা হয়। কিছু দিন আগে সেখানে তার গ্রেপ্তার হওয়ার গুজব ছড়িয়েছিল। আর ডালিম কোথায় আছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বরের বাড়িতে একদল বিপথগামী সেনার বুলেটে প্রাণ দিতে বঙ্গবন্ধুকে। ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পাননি বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজি কামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাব ইন্সপেক্টর ছিদ্দিকুর রহমান, পেট্রোল ডিউটির সৈনিক সামছুল হক ও রাষ্ট্রপতির মিলিটারি সেক্রেটারি কর্নেল জামিলের।

দেশের বাইরে থাকায় সেদিন প্রাণে বেঁচে যান জাতির পিতার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রেসিডেন্ট হওয়া খন্দকার মোশতাক আহমেদ খুনিদের রক্ষায় ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন, ১৯৭৯ সালে যাকে আইনে পরিণত করেন জিয়ারউর রহমান। হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’ বাতিল করে হত্যাকাণ্ডটির বিচারের পথ সুগম করে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।

২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বজলুল হুদা, ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, একেএম মহিউদ্দিন ও মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড ও মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা হয়। বাকি আসামিরা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন। এদের মধ্যে আজিজ পাশা ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে খবর এলেও হত্যা মামলার নথিতে তার মৃত্যুর কোনো তথ্য-উপাত্ত না থাকায় তাকে পলাতক দেখানো হয়। সবশেষ ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের।

ঝালকাঠি আজকাল