• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

হাতঘড়ির ফ্যাশন ফিরে এসেছে

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০১৯  

 

তারুণ্যের হাতের ডানায় আবার সগৌরবে ফিরে এসেছে হাতঘড়ি। ফ্যাশনে, সৌন্দর্যে, ব্যক্তিত্বে, আভিজাত্যে হাতঘড়ি এখন নতুন নান্দনিকতার প্রতীক। শুধু তারুণ্যের নয়, সব বয়সী মানুষের হাতের কবজিতেই এখন হাতঘড়ি বেশ শোভা পাচ্ছে। মোবাইল ফোনের ডিজিটাল পর্দা উপেক্ষা করে হাতের ঘড়িতেই সময় খুঁজছেন মানুষ। সামর্থ্যরে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে ঘড়ি কিনছেন অনেকে। ঢাকার বিক্রেতারা জানান, বিত্তবান ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কোটি টাকা দামের ঘড়িও পরেন। কারও সংগ্রহে আছে মেয়েদের গহনার মতো নানা ব্র্যান্ডের অসংখ্য ঘড়ি। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে একেক দিন একেকটা পরেন। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে দেশে হাতঘড়ির বাজার দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশে বিশ^খ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর সবচেয়ে বেশি ঘড়ি আমদানি করে কল্লোল ইন্ডাস্ট্রিজ লি.। তারা ২৭টি ব্র্যান্ডের ঘড়ি বাংলাদেশের বাজারে বাজারজাত করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের ঘড়ি হলোÑরাডো, টিসট্, সিকে,   সিটিজেন, কেসিও, সিকো, টাইটান, রোমানসন, ক্রিডেন্ট ও ওবাকু। কল্লোলের ঘড়ি বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান টাইম জোনের ঢাকাসহ সারা দেশে ৪৪টি আউটলেট রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই রয়েছে ২৩টি আউটলেট। কল্লোল ইন্ডাস্ট্রিজের ঘড়ি বিভাগের ম্যানেজার মো. মাসুদ আলমের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয় তাদের তেজগাঁও অফিসে বসে। তিনি বলেন, আমরা তিন হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা দামের ঘড়ি বিক্রি করি। এ ছাড়া সুইস ঘড়ি লনজিস আছে ৮০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের। মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ আমাদের ঘড়ির ক্রেতা। এ ছাড়া করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক গ্রাহক আছেন যারা ৫০০, ৭০০ কিংবা হাজার পিস ঘড়ি এক অর্ডারে কিনে নিয়ে যান। তারা নিজেদের ডিলার নেটওয়ার্কে এসব ঘড়ি বিতরণ করেন। বিশেষ করে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) কিংবা ডিলার সম্মেলনে ডিলারদের এসব ঘড়ি দেওয়া হয়। ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো তাদের বিক্রয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমেও শত শত ডাক্তারকে ঘড়ি উপহার দেন। এ জন্য তারা প্রতিবার শত শত ঘড়ি নিয়ে যান।      

মাসুদ আলম বলেন, বাংলাদেশে হাতঘড়ির বাজার প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। তারুণ্য এখন ঝুঁকছে হাতঘড়ির প্রতি। এখানকার তরুণরা ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে হাতঘড়ি পরছেন। বিয়ের গিফট হিসেবেও এখন প্রচুর ঘড়ি বিক্রি হচ্ছে। টাইম জোন ছাড়াও সাকো, ওয়াচেস ওয়ার্ল্ড, মোহাম্মদ অ্যান্ড সন্স বাংলাদেশে ঘড়ি আমদানি করছে। তিনি বলেন, ঘড়ি বিক্রির পর আমরা বিক্রয়োত্তর সেবা দিই। সুইজারল্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডের সার্ভিসিং সুবিধা আমাদের রয়েছে। আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে অনেকের ২০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত ঘড়ি আছে। অনেকের আছে তারচেয়েও বেশি। তারা জামা-জুতার সঙ্গে ম্যাচ করে ঘড়ি পরেন। ছেলেদের অনেকে এখন ঘড়ি নিয়ে ফ্যাশন করে। লাক্সারি ওয়াচ বুটিক শপ মোহাম্মদ অ্যান্ড সন্স বাংলাদেশে উচ্চমূল্যের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘড়ি বাজারজাত করছে। তাদের শোরুমটি তেজগাঁও-গুলশান লিঙ্ক রোডের শান্তা ওয়েস্টার্ন টাওয়ারে। এটি মেঘনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, যারা বিশ^ বাজারে বাংলাদেশের শীর্ষ সাইকেল রপ্তানিকারক এবং দেশে বিএমডাব্লিউ এবং কিয়া গাড়ির আমদানিকারক। গত বছরের নভেম্বরে পাঁচটি বিখ্যাত ব্র্যান্ডের ঘড়ি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। সেগুলো হচ্ছেÑ জেনিথ, ট্যাগ হিউয়ার, মন্ট ব্ল্যাঙ্ক, ফ্রেডেরিক কনস্টেন্ট ও মোভাডো। মোহাম্মদ অ্যান্ড সন্সের জেনারেল ম্যানেজার সাফায়েত চৌধুরী জানান, তাদের ঘড়ির দাম ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। চাকরিজীবী ও করপোরেট ক্লায়েন্টরাই মূলত ঘড়ি কিনতে আসেন। তিনি বলেন, বিয়ের গিফট, ফেয়ারওয়েলে ব্যবহারের জন্যও অনেকে আমাদের ঘড়ি কিনেন। আমরা কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্রেতাদের ১২ মাসের কিস্তিতে ঘড়ি কেনার সুবিধা দিচ্ছি। তবে ঘড়ি আমদানিতে উচ্চ হারের শুল্ক বড় বাধা বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ৩৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান থাকায় ঘড়ির আমদানি খরচ অনেক বেশি। ঘড়ি এখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ফ্যাশন অনুষঙ্গ। তাই ঘড়ির ট্যাক্স কমানো উচিত। স্মার্টফোনের কারণে বিশ^ব্যাপী হাতঘড়ির ব্যবহার এক সময় কমে গিয়েছিল। সেই অবস্থার এখন পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। ডিজিটাল ডিভাইসের আলোর অন্ধকার থেকে চোখের মুক্তি চাইছেন সচেতন মানুষ। সেজন্য বাংলাদেশে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন তাদের লাখ লাখ সদস্যকে স্মার্টফোনের নির্ভরতা কমিয়ে হাতঘড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।  শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ^বাজারেও হাতঘড়ির চাহিদা বেড়েছে। ফেডারেশন অব সুইস ওয়াচ ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি-নভেম্বর সময়ে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলারের ঘড়ি রপ্তানি হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে এটি ৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। সুইস ঘড়ির শীর্ষ বাজার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী লোকদের শহর হংকংয়ে রপ্তানি বেড়েছে ২১ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে ৮ শতাংশ, চীনে ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশে এখন বছরে ২০ শতাংশ হারে ঘড়ির বাজার বাড়ছে বলে আমদানিকারকরা জানান।

ঝালকাঠি আজকাল