• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

হরিণঘাটা বনে ১০ হাজারের বেশি হরিণ রয়েছে

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

 


বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় সাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা হরিণঘাটা বনে ১০ হাজারেরও বেশি হরিণ রয়েছে। পূর্বে বিষখালী পশ্চিমে বলেশ্বর নদ আর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এ বনে রয়েছে ২০ প্রজাতির বৃক্ষরাজি। সৃজিত বনে কোন হিংস্র প্রাণী নেই। হরিণের পাশাপাশি রয়েছে বনমোরগ, বানর, শূকর, গুইসাপ, নানা প্রজাতির সরীসৃপসহ ২০ প্রজাতির বন্য প্রাণী। আরও আছে ৭০ প্রজাতির পাখি। বনের ভেতরে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৮টি খাল। বনের দক্ষিণ সীমানায় সাগর মোহনায় চরে গড়ে উঠেছে শুঁটকিপল্লী। বরগুনার বন বিভাগ জানিয়েছে, হরিণঘাটা বনের ভেতরে নির্মিত ফুট ট্রেইল (বনের ভেতর পায়ে চলা সেতু আকৃতির পথ) দর্শনার্থীদের নিসর্গ মায়ায় টানে। বনের ভেতর উঁচু পিলারের ওপর পায়ে চলা পথ ধরে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে বনের প্রাণ-প্রকৃতি ও সাগরতীর দর্শনের সুযোগ পাচ্ছে।

পাথরঘাটা বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলা শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে সাগর মোহনায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে হরিণঘাটা বন। ১৯৬৭ সাল থেকে বন বিভাগ হরিণঘাটা বনটি সম্প্রসারণে নানা প্রজাতির বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে বন সৃজন শুরু করে। বর্তমানে ২৪ হাজার একরজুড়ে দৃষ্টিনন্দন এ বনে প্রাকৃতিক কেওড়া, গেওয়াসহ সৃজিত সুন্দরী ও ঝাউবন রয়েছে। সংরক্ষিত এ নয়নাভিরাম বনকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার ২০১০ সালে জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিলের মাধ্যমে বন বিভাগ হরিণঘাটা বন ও সাগরতীর দর্শনের লক্ষ্যে নির্মাণ করেছে ফুট ট্রেইল। এ ছাড়া বনের ভেতর নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, বিশ্রামাগার ও গোলঘর। এ ম্যানগ্রোভ বন পাথরঘাটা উপজেলা শহর থেকে কাছে হওয়ায় বনে হিংস্র জীবজন্তু না থাকায় বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে নিঃসংকোচে বেড়াতে আসে।

বন বিভাগের পাথরঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, হরিণঘাটা বনাঞ্চলে ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে গড়ে তুলতে দর্শনার্থীদের স্বচ্ছন্দে চলাচলের জন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় জলবায়ু ট্রাস্টের তহবিলের আওতায় বনের ভেতর একটি ঝুলন্ত সেতুসহ পায়ে চলা পথ (ফুট ট্রেইল) নির্মাণ করা হয়েছে। বনের ভেতর আঁকাবাঁকা দুই হাজার ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ফুট ট্রেইল তিন ধাপে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকায় ৫০০ মিটার ফুট ট্রেইল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে দ্বিতীয় ধাপে ৪৫০ মিটার ও পরবর্তী ধাপে দুই হাজার মিটারসহ মোট দুই হাজার ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এ ফুট ট্রেইল বনের ভেতর দিয়ে সাগর মোহনায় সৃজিত ঝাউবন পর্যন্ত বিস্তিৃত হবে।

পাথারঘটা উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, হরিণঘাটা বন ঘিরে পাথরঘাটায় পর্যটনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। পর্যটকদের আগমনের ফলে এ এলাকার শতাধিক পরিবার ক্ষুদ্র ব্যাবসা করে খেয়েদেয়ে বেশ ভালোআছেন।

পটুয়াখালী অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমিনুল ইসলাম জানান, হরিণঘাটা বনে আনুমানিক দশ হাজারের বেশি চিত্রল হরিণ রয়েছে। বনটি প্রধানত গ্রিনবেল্ট হিসেবে দুর্যোগ থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি। তবে এটাকে জীববৈচির্ত্য গবেষণা ও শিক্ষার উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। আর সুন্দরবন ও টেংরাগিরির (ফাতরা বন) মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এ পর্যটন পটটি হতে পারে একটি আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র। আমরা এ কেন্দ্রগুলো উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে প্রজেক্ট দাখিল করেছি।

ঝালকাঠি আজকাল