• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

সাতক্ষীরায় সিরিজ বোমা: ১৭ আসামির কারাদণ্ড

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

সাতক্ষীরায় পাঁচ স্থানে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ১৭ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে চারজন পলাতক আসামিসহ আটজনের ১৩ বছর করে ও নয়জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এ মামলায় একজন মারা গেছেন এবং আবুল খায়ের নামে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শফিকুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

এ ছাড়া ২০০৭ সালে জেএমবির অপর একটি মামলায় সাতক্ষীরা থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত গোলম মোহাম্মদ দায়েরকৃত ২৩ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আব্দুস সামাদ জানান, ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়ে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানো হয়।

ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাঁকালের নাসিরুদ্দিন দফাদারকে প্রত্যক্ষদর্শী বাঁকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাটি চিহ্নিত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৫ সালে পাঁচটি মামলা দায়ের করে।

পরবর্তীতে ২০০৭ সালে সাতক্ষীরা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এ সব মামলায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

গ্রেফতারকৃত মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল ২০১১ সালের জুনে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতার হওয়া সব আসামিই সাতক্ষীরার  আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিস্কের রক্তক্ষরণজনিত সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান।

তিনি আরও জানান, আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি এসব মামলায় ১৯ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৭ সালে দায়েরকৃত মামলাটিতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ  আদালতে এসব মামলার বিচারকাজ শুরু করেন।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানান, বুধবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় মাহাবুবর রহমান, সাইফুল ইসলাম, ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিন, বিল্লাল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ, হাবিবুর রহমান ওরফে ইসমাইল, মনিরুজ্জামান মুন্না, সাইফুল ওরফে আসাদুজ্জামান, হাজারী ওরফে সাঈদ, খালিদ হোসেন ওরফে মিণ্টু ও শামীম হোসেন ওরফে গ্যালিব, ওবায়দুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ওরফে ইসমাইল, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আহাদ, আশরাফ আলী ও মামুন। এ ছাড়া জামিনে থাকা সাতক্ষীরা সদরের খড়িবিলার মমতাজ উদ্দিন ও আশাশুনির কুল্লার নূর আলী মেম্বরও আদালতে হাজির হন।

এ মামলার আসামি সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, সাতক্ষীরা সদরের সাতানির আবুল খায়ের, কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন পলাতক রয়েছে। 

ঝালকাঠি আজকাল