• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

যে কারণে নুহ ও লুত (আ.) এর স্ত্রীরা জাহান্নামি

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২০  

 

পবিত্র কোরআনুল কারিমে নবী নুহ ও লুত (আ.) এর স্ত্রীদের জাহান্নামের অধিবাসী বলা হয়েছে। আবার ফেরাউনের স্ত্রী হজরত আছিয়াকে মুমিন নারীদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে জান্নাতি বলা হয়েছে।
বিবাহিত ঈমানদার নারীরা বিশেষ ২ গুণের কারণে লাভ করবে চিরস্থায়ী জান্নাত। তাদের জন্য জান্নাতের মধ্যে নির্মাণ করা হবে আলাদা ঘর। যেখান থেকে তারা আল্লাহর দিদার লাভ করবে। নারীদের সে গুণ দু’টি হলো-

(১) স্বামীর দোষ প্রচার না করা তার প্রশংসা ও সহযোগিতা করা। অর্থাৎ অন্য মানুষের কাছে স্বামী দোষ বা কুৎসা বলে বেড়ানো থেকে বিরত থাকা।

(২) স্বামীকে অভিশাপ না দিয়ে তাদের জন্য কল্যাণে দোয়া করা। অর্থাৎ স্বামীর জন্য বদ-দোয়া বা তাদের কথা ও কাজের অকল্যাণ কামনা না করা।

আর স্ত্রীরা কারণে-অকারণে স্বামীদের সঙ্গে এ দু’টি কাজই বেশি করে থাকে। সামান্য কারণেই স্বামীকে দোষারোপ করে কিংবা কথায় কথায় অভিশাপ দিয়ে থাকে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেননা এ দুইটি কারণই একজন ঈমানদার নারীকে নিশ্চিত জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়। 

মহান রাব্বুল আরামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে নবী নুহ ও লুত আলাইহিস সালামের স্ত্রীদের কথা উল্লেখ করে বলেন,

ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ كَفَرُوا اِمْرَأَةَ نُوحٍ وَاِمْرَأَةَ لُوطٍ كَانَتَا تَحْتَ عَبْدَيْنِ مِنْ عِبَادِنَا صَالِحَيْنِ فَخَانَتَاهُمَا فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَقِيلَ ادْخُلَا النَّارَ مَعَ الدَّاخِلِينَ

‘আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের জন্যে নুহ-পত্নী ও লুত-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর তারা তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নুহ ও লুত তাদেরকে আল্লাহ তায়ালার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হলো, জাহান্নামিদের সঙ্গে জাহান্নামে চলে যাও।’ (সূরা: তাহরিম : আয়াত ১০)।

এ আয়াতে খেয়ানত বলতে নবীদের স্ত্রীরা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছিল এটি বুঝানো হয়নি বরং তারা নবীদের সঙ্গে ঈমানের পথে হাটেনি বরং তারা নবীদের বিরুদ্ধে ইসলামের শত্রুদের সহযোগিতা করেছিল।

নবীদের কাছে যারা ঈমান নিতে আসতো তাদের তথ্য অন্যের কাছে দিয়ে দিতো। নবীদের ব্যাপারে লোকদের বলে বেড়াতো- এ লোক একজন পাগল। তারা তাদের স্বামী নামে চোগলখুরী করতো। তাদের নামে কুৎসা রটনা বা বদনাম বলে বেড়াতো। যার ফলে নবীদের সঙ্গে সংসার করা সত্বেও তারা জাহান্নামী।

পক্ষান্তরে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাসীদের (নারীদের) উদ্দেশ্যে ফেরাউনের স্ত্রী হজরত আসিয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। যিনি ফেরাউন ও তার বাহিনীর অত্যাচারে আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন ঠিকই ফেরাউনের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ বা বদদোয়া করেনি। আবার তার কোনো দোষও বলে বেড়াননি। আল্লাহ বলেন,

وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ آمَنُوا اِمْرَأَةَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِندَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِن فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

‘আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের জন্যে ফেরাউন-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বলল: হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফেরাউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে জালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন।’ (সূরা: তাহরিম, আয়াত: ১১)।

এ আয়াতের আলোকে বুঝা যায় যে, ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া স্বামী অবিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও তার ব্যাপারে বদদোয়া করেনি এবং তার কোনো দোষও বর্ণনা করেনি বরং তার অত্যাচার ও দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার হওয়ার আবেদন করেছেন। আল্লাহ তায়লা স্বামীদের অধিকারের ব্যাপারে বিশ্বাসী নারীদের জন্য এ আয়াত তুলে ধরেছেন।

এ আয়াতের তাফসিরে এসেছে-

ফেরাউনের স্ত্রীর নাম ছিল আসিয়া। তিনি হজরত মুসা আলাইহিস সালামের আহ্বানে ঈমান এনেছিলেন। ফেরাউন তার হাত ও পায়ে পেরেক দিয়ে আটকিয়ে মাথার ওপ গরম তেল ঢেলে দিয়েছিলেন। যার ফলে তার মাথার চুল ও চামড়াগুলো ওঠে গিয়েছিল। সে সময় ফেরেশতারা তার সামনে জান্নাতের দৃশ্য তুলে ধরেছিলেন। ফলে ফেরাউনের শাস্তি তার কাছে সহজ হয়ে গিয়েছিল। আর তখন তিনি আল্লাহর কাছে উল্লেখিত দোয়া করেছিলেন।

সুতরাং প্রত্যেক ঈমানদার নারীর উচিত যে, স্বামীর ব্যাপারে চোগলখুরী না করা। স্বামীদের দোষ বলে বেড়ানো থেকে বিরত থাকা। স্বামীর জন্য বদদোয়া বা অভিশাপ না দেয়া। বরং স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞপনের পাশাপাশি তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা। তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা। ফলে তারা পাবে সুনিশ্চিত জান্নাত।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে কোরআনুল কারিমের এ দুই আয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে স্বামীদের আনুগত্য করার তাওফিক দান করুন। সব সময় স্বামীদের পাশে থেকে তাদের কল্যাণমূলক কাজে সহযোগিতা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঝালকাঠি আজকাল