• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কারের মুখে তারেক

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০১৯  

তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, পাঁচটি কারণে ভারত যুক্তরাজ্যে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিলে দাবিতে আবেদন করেছে। এই আবেদনের ব্যাপারে আগামী ১৩ আগস্ট শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে যুক্তরাজ্যের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও জানাচ্ছে যে, তারেকের বিরুদ্ধে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেওয়া, উস্কানি দেওয়া, সন্ত্রাসীদের অর্থ যোগান দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তবে তারেক রহমান একা না, ভারত বিরোধীতা করা এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগে এরকম ১৪ জনের একটি তালিকা ভারতের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও বলছে যে, দ্বিতীয় মেয়াদে এসে মোদি সরকার বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছেন। এইসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যারা মদদ দিচ্ছে, অর্থ সহায়তা দিচ্ছে- তাদেরও তালিকা প্রস্তুত করেছে। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও যেসমস্ত ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছেও একইরকমভাবে নালিশ করেছে।

উল্লেখ্য, তারেক রহমান গত ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ২০১৪ সালে তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট সারেন্ডার করেন। তখন থেকে সেখানে তিনি রিফিউজি হিসেবে সেখানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তিনদফা আনুষ্ঠানিক অভিযোগও ব্রিটিশ সরকারের কাছে দাখিল করা হয়। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এখন পর্যন্ত তারেক রহমানের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।

অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে যে, তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে একটি কোম্পানি খুলেছেন। সে কোম্পানিতে তিনি এবং তার স্ত্রী পরিচালক হিসেবে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এর একটি অভিযোগও ব্রিটিশ সরকার তদন্ত করছে। আরেকটি সূত্র দাবি করছে যে তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। আবার অন্যান্য অনেক সূত্র বলছে, কোনো নাগরিকত্ব নয়, শুধুমাত্র রিফিউজি হিসেবেই তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। তার মানি লন্ডারিংয়ের যে মামলাটি ব্রিটেনে তদন্তাধীন রয়েছে, সে মামলাটির ব্যাপারেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

এরকম পরিস্থিতিতে ভারত আকস্মিকভাবে তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যে থাকা নিরাপদ নয় বলে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। এই লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত বিষয়টির শুনানির জন্য যুক্তরাজ্যের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে। সূত্রমতে, তারেক রহমানের সঙ্গে কাশ্মিরের একাধিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র রয়েছে, এছাড়া উলফা এবং আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে তারেক রহমানের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে যে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে, সেই অস্ত্রগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সরবরাহের জন্যই নিয়ে আসা হয়েছিল। তারেক রহমান ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এরকমভাবে প্রকাশ্যেই অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করতেন বলে জানা গেছে। এখনো বাংলাদেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির জন্য তারেক রহমান ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে। পাশাপাশি তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ঠরা মনে করেন যে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি না করলে বর্তমানে টানা তিন মেয়াদে থাকা আওয়ামী সরকারকে বিপদে ফেলা যাবে না। সেই লক্ষ্য থেকেই তারেক রহমান ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উসকে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও ভারত এই বিষয়টিকে অত্যন্ত সিরিয়াসলি নিয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো ভারতের চাপ মোকাবেলা করে তারেক রহমান কীভাবে লন্ডনে অবস্থান করেন।

ঝালকাঠি আজকাল