• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

মানসিক যে সমস্যা উপেক্ষা করবেন না

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯  

মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ একজন মানুষ সেই ক্ষমতা অর্জন করে, যা তাকে নিজের সঙ্গে এবং তার চারপাশে থাকা অন্যান্যদের সঙ্গে যুক্ত হতে বা একাত্ম হতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এ দক্ষতার জোরে মানুষ তার জীবনের নানাবিধ চ্যালেঞ্জকেও গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের ধারণার সঙ্গে মানসিক দুর্বলতা বা অস্বাভাবিকতার কোনও সম্পর্ক নেই। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক দিক দিয়ে বিচার করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’।

তাদের মতে স্বাস্থ্য হলো শরীর, মন এবং সমাজের ভালো দিকগুলোর মেলবন্ধন। এ ভাবনার সঙ্গে রোগ বা দুর্বলতার দিকটি যুক্ত নয়। ‘হু’ আরও বলেছে যে, সুচিন্তার অধিকারী মানুষ তার দক্ষতা বাড়াতে সব সময়ই সচেষ্ট, এ দক্ষতাই তাকে জীবনের বিপর্যয়গুলির মোকাবিলা করে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করে, উৎপাদনশীল কাজে সে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে এবং নিজের গোষ্ঠী ও সমাজের জন্যও অবদান রেখে যেতে পারে।

সবারই জীবনের কোনও না কোনও সময়ে সাময়িক ভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। ব্যক্তিগত বা কর্মজীবনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেক সময়ই মানসিক অবসাদ এবং উদ্বিগ্নতার শিকার হতে হয়। যখন দেখা যায় স্বাভাবিক কাজগুলো ব্যাহত হচ্ছে, তখনই মানসিক অসুস্থতার প্রশ্নটি সামনে আসে।

প্রাত্যহিক জীবনযাপনের সঙ্গে যে অসুখগুলো জড়িয়ে রয়েছে, সে বিষয়ে যতটা সচেতন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ততটা সচেতনতা তো দেখাই যায় না, বরং এর বিষয়ে কোনও কথা বলাই যেন নিষেধ। বেশিরভাগ সময়েই মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাটি একটা ভুল ধারণার ওপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।

গুরুত্বপূর্ণ মানসিক সমস্যাগুলো নিরাময়ের জন্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণ ভাবে দেখা যায়, মানসিক সমস্যা দেখা দিলে তা বেশিরভাগ সময়ই চিকিৎসা করানো হয় না। বিষয়গুলোকে অবহেলা করা হয়। অধিকাংশ সমস্যাকেই ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।

বাংলাদেশে প্রায় ৬০ লাখ লোক মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন। মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা আসলে কী, নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা নিয়ে আদৌ কী ভেবেছেন কখনো?

সবচেয়ে সাধারণ মানসিক অসুস্থতা কোনটি :

দুশ্চিন্তা, বিষন্ণতা, অনিদ্রা, ওসিডি বা শুচিবায়ু, ফোবিয়া বা ভীতি

দুশ্চিন্তা : কোন কারণ ছাড়াই মানসিক চাপ নেতিবাচক চিন্তায় আচ্ছন্ন। চাপের কারণে হৃদকম্পনের হার বেড়ে যাওয়া। চাপের কারণে ঘেমে যাওয়া।

বিষন্ণতার লক্ষণগুলো কী : মন খারাপ, সারাক্ষণ আলস্য বা ক্লান্তি অনুভূতি জীবনের প্রতি নিরুৎসাহ। কাজে অনুপ্রেরণার অভাব। মানুষের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতে কম আগ্রহী।

অনিদ্রা : ঘুমিয়ে পড়তে সমস্যা হওয়া। নিদ্রাহীনতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পীড়া। চাপের কারণে ঘুম না আসা। বিষণ্নাতাজনিত অনিদ্রা

ওসিডি বা শুচিবায়ু : যে কোনো কাজের প্রতি উৎসাহের অভাব। একটা কাজ শেষ করা নিয়ে বার বার চিন্তা করা। অপ্রয়োজনীয় চাপ নেওয়া। বিরক্তিবোধ হওয়া। আগ্রাসী মনোভাব।

ফোবিয়া বা ভীতি : কোনো কিছুতে তীব্র ভয়। এ ধরনে সমস্যা এক সপ্তাহের বেশি হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তীব্র মানসিক সমস্যা : সিজোফ্রেনিয়া বাইপোলার স্মৃতিভ্রংশ অ্যালঝেইমার।

সিজোফ্রেনিয়া : এটি এমন একটি মানসিক সমস্যা যখন মনে অস্বাভাবিক চিন্তা ভর করে। সহজে কোনো জিনিস গ্রহণ করতে সমস্যা।

হ্যালুসিনেশন বা বিভ্রম : ত্বকে চিমটির মত অনুভূতি। কেউ ক্ষতি করতে চাইছে এমন সন্দেহ। লোকজনের সাথে দেখা সাক্ষাতে অনাগ্রহ। নিজের যত্ন নিতে নিরুৎসাহ।

বাইপোলার : এটা হলো মেজাজের পরিবর্তন। কোন কোন দিন খুব খুশি। কোনো কোনো দিন খুব মন খারাপ। ২ সপ্তাহের জন্য হয় খুব খুশি নতুবা খুব মন খারাপ থাকা। যখন খুশি থাকা হয় তখন প্রচুর কর্মচাঞ্চল্য থাকে। খুশিতে অনেক বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ। যখন মন খারাপ তখন খুবই দুর্বল।

স্মৃতিভ্রংশ অ্যালঝেইমার : এটা এমন এক ধরনের সমস্যা যখন সব কিছু ভুলে যাওয়া শুরু হয়। মূলত ৫৫-৬০ বছরের লোকজন বেশি আক্রান্ত হয় এ সমস্যায়। সন্দেহ হওয়া। নিজের বাসার ঠিকানা ভুলে যাওয়া অন্যদের সাথে সবসময় হতাশা ভাব। অন্যেদের সন্দেহ করা। ২ সপ্তাহের বেশি এই সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ঝালকাঠি আজকাল