• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

বঙ্গবন্ধুর চলার পথের প্রেরণা ছিলেন বঙ্গমাতা

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২০  

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের জন্মদিনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে নয় একজন নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা।

শনিবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘গৃহকোণ থেকে জনগণের হৃদয়ে’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে তারা এসব কথা বলেন। সাবেক ছাত্র নেতা ও কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়-এর সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমীর হোসেন আমু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম । অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।

আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর কোনও পিছুটান ছিল না বলেই তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে পেরেছিলেন, আর বঙ্গবন্ধুর এই চলার পথকে মসৃণ করেছিলেন বঙ্গমাতা। বেগম মুজিবের মধ্যে কিছু ঐশ্বরিক ক্ষমতা থাকতে পারে নয়ত যে বয়সে ছেলেমেয়েদের বাবা-মার কাছে আবদার থাকে সে বয়সেও বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুর হাতে তার জমানো টাকা তুলে দিতেন, যাতে বঙ্গবন্ধুর কলকাতায় কষ্ট না হয়। এই যে তার ত্যাগ, সেই ত্যাগের বিনিময়েই বঙ্গবন্ধুর কিন্তু বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠা। আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকা অবস্থায় বঙ্গমাতা আমাদের সাহস যুগিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এমনকি ঈদ করার টাকাও দিয়েছিলেন ছাত্র আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের সঙ্গে দেখা করতেন গোপনে, ধানমন্ডিতে দুটি বাসায় আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো, এই দুটি বাসায় তিনি দেখা করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন। তার জমানো টাকা পরিবারের পিছনে না খরচ করে আমাদের মত ছাত্রনেতাদের দিতেন আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে নেওয়ার জন্য।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সৌভাগ্য হয়েছিলো বঙ্গমাতাকে দেখার, বাবার সঙ্গে ৩২ নাম্বার বাড়ি গিয়েছিলাম একবার। তাকে দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম, এত বড় একজন মানুষের স্ত্রী এত সাধারণ হবে আমার ধারণাই ছিল না।

সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব সম্পর্কে নানা জানা-অজানা কথা তুলে ধরেন। তিনি তার প্রবন্ধে, বঙ্গমাতাকে একজন শান্ত ধীরস্থির, ধৈর্যশীল, সাহসী, প্রজ্ঞাবান, তেজস্বিনী এবং অমায়িক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দেশের জন্য তিনি তার দুই সন্তানকে মাতৃভূমি স্বাধীন করার লড়াইয়ে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কারা জীবনে শতবার দেখা করতে যাওয়ার ঘটনাও প্রবন্ধে উল্লেখ করেন এই সাংবাদিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, পৃথিবীতে কিছু মহিয়সি নারী আছেন যারা একজন মহামানবকে তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন আমাদের বঙ্গমাতা বেগম মুজিব তাদের মধ্য একজন। বঙ্গবন্ধুর যে তিন খণ্ড আত্মজীবনী বের হয়েছে সেগুলো লিখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন বঙ্গমাতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ড. নাসরীন আহমদ বলেন, আমরা প্রতিবেশী ছিলাম, দুই বাড়ির মাঝে ছোট একটা দেয়াল, একটা ছোট গেট। সেই গেইট দিয়ে আমাদের অবাধ যাতায়াত ছিল। তাদের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন থেকে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অবাধ যাতায়াত ছিল, আর এসব সামলাতেন বঙ্গমাতা। আমরা তাকে কখনও কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে দেখিনি, দেখিনি উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বঙ্গমাতা একাধারে ছিলেন রাজনীতিক, একজন বিশ্লেষক ও একজন পরামর্শক। বঙ্গবন্ধুর অনেক ডিসিশনে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। বেগম মুজিবকে নিয়ে আরও গবেষণা করারও কথা উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। আলোচকরা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবনে ফজিলাতুননেছা মুজিবের ভূমিকা, বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় বেগম মুজিবের দলকে সুসংগঠিত করা ছাড়াও বঙ্গমাতার অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কেও আলোকপাত করেন।

ঝালকাঠি আজকাল