• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

প্রধানমন্ত্রীর উপহার

প্রতিবন্ধী দুলালের চোখে নতুন স্বপ্ন

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২১  

প্রতিবন্ধী মো. দুলালের (৩৭) চোখে এখন নতুন স্বপ্ন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে সুদৃশ্য সেমিপাকা ঘর পাচ্ছেন তিনি। সেখানে স্ত্রী নাজমা বেগম এবং চার নাবালক ছেলেকে নিয়ে নিশ্চিন্তে বাকি জীবনটা কাটাতে পারবেন তিনি।

তাদের মতোই দরিদ্র চায়ের দোকানি জীবন মালাকার (৪৮), গুরুতর অসুস্থ জিল্লুর মিয়া (৯০), সিএনজি অটোচালক শাহেদ মিয়া (৩৯), শফিকসহ (৩৬) ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের ঠাঁই মিলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের জাঙ্গাল গ্রামে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের গড়ে তোলা নিবাসে।

'মুজিববর্ষে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না'- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিনামূল্যে তাদের ঘর দেওয়া হচ্ছে। দুই কক্ষের সুদৃশ্য বাড়ির পাশাপাশি দুই শতক জমিও দেওয়া হবে এসব পরিবারকে। এর মধ্যে ১২টি পরিবারকে আগামীকাল রোববার ঘর ও জমি তুলে দেওয়া হবে। এদিনই সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারের মধ্যে গৃহ ও জমি হস্তান্তরের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর ও জমি দেওয়া হচ্ছে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে।

সরেজমিনে জাঙ্গাল গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনকালে দুলাল জানান, ৭ বছর বয়সে দেয়াল চাপা পড়ে তার হাত কাটা গিয়েছিল। সেই থেকে পঙ্গু তিনি। ভ্যান চালিয়ে ও সরকারের দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে কোনোরকমে দিন পার করছিলেন তিনি। ভাড়া ও জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘরে খুবই কষ্টে বসবাস করছিলেন স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ, পানিসহ জীবন ধারণের অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত হয়েছে।

প্রতিবন্ধী দুলালের মতো চা বিক্রেতা জীবন মালাকারও বিনামূল্যের ঘর পেয়ে অসীম কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। তিনিসহ অন্য ২০টি দরিদ্র পরিবারের সবাই বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তাদের জীবনধারা বদলে দিয়েছেন। এতদিন তাদের ঘর ছিল না অথবা ঘর থাকলেও ছাপড়া অথবা টিনের ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের জমি দিয়েছেন, থাকার জন্য ঘরও করে দিয়েছেন। এতে তারা অনেক খুশি। তারা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করছেন তিনি যেন দীর্ঘ জীবন লাভ করেন এবং মানুষের সেবা করে যেতে পারেন।

এবারের ঘরগুলোও এর আগে হস্তান্তর হওয়া ঘরগুলোর মতো একই নকশায় নির্মিত হয়েছে। নীল, লাল ও সবুজ টিনশেডের প্রতিটি গৃহে ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দুটি করে শোয়ার ঘর, একটি রান্নাঘর, টয়লেট এবং সামনে খোলা বারান্দা থাকবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহপ্রতি ২ লাখ টাকা করে খরচ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে খরচ হয়েছিল গৃহপ্রতি ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এ জেলায় ঘর ও জমি দেওয়ার জন্য মোট ৬ হাজার ৯৪টি ভূমিহীন পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে দুই ধাপে ৬৮১টি পরিবারকে ঘর ও জমি দেওয়া হচ্ছে। বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে ঘর ও জমি দেওয়া হবে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেছেন, একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে বাড়ি-ঘর দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। অসহায় মানুষকে এভাবে ঘর দেওয়াকে 'অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল' বলা যায়। বিশ্বে এটা নতুন মডেল, যেটা আগে কেউ ভাবেনি।

ঝালকাঠি আজকাল