• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

ধর্ষণ প্রতিরোধে অভিনব জুতা আবিষ্কার!

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২০  

 


‘জুতা আবিষ্কারের’ গল্প কে না জানে! একবিংশ শতকে সেই আবিষ্কারেই এল এক নয়া টুইস্ট। বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতিতে নারীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এক ‘অভিনব জুতা’ আবিষ্কার করলেন ভারতের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী। 

ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ঘটনায় জর্জরিত সমাজ। তাই নিজেদের সুরক্ষা কবচ কেবল নিজেদের হাতে নয়, পায়েও রাখা যাবে এবার থেকে। 

অবাক করার মতো শুনতে লাগলেও এমনই এক ‘সেফটি সু’ আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের কর্মী বাপ্পা রায়।
দেখতে একবারেই হাল ফ্যাশানের জুতা এই ‘সেফটি সু’। কিন্তু সঙ্গে থাকছে নয়া টেকনোলজি। জুতার মধ্যেই থাকবে জিপিএস সিস্টেম, যা দিয়ে সহজেই লোকেশন ট্র্যাকিং করা যাবে। পাশাপাশি থাকবে ছ’শো ভোল্টের এ সি কারেন্ট। অর্থাৎ মহিলারা চাইলেই এই জুতোর বৈদ্যুতিক ক্ষমতা দিয়ে অনায়াসে দুষ্কৃতীদের কুপোকাৎ করতে পারবে বলেই আশা রাখছেন আবিষ্কারক বাপ্পা। তাকে এই আবিষ্কারের কাজে সহায়তা করেছেন ওই বিভাগেরই কিছু শিক্ষার্থী।

বাপ্পা রায়ের তৈরি এই সেফটি সু এর দামও থাকছে সাধ্যের মধ্যেই। মাত্র সাড়ে তিনশো থেকে চারশো টাকার মধ্যেই থাকছে এই জুতোর দাম। ইভটিজিংয়ের সম্মুখীন হলে মেয়েরা অনায়াসেই এই সেফটি জুতো ব্যবহার করে আত্মরক্ষা করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, সহজেই মেয়েটির লোকেশন ট্র‍্যাক করতে পারবে পুলিশও। সমসাময়িক পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী বাপ্পা ও তাঁর সহযোগীদের তৈরি এই ‘সেফটি সু’ আলোড়ন ফেলে দিয়েছে রায়গঞ্জে। এমনকী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে খুলতে চলা ডিআরডিও-এর সেন্টারে এই অভিনব জুতোটিকে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টা নিতে চলেছে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কীভাবে আবিষ্কার করলেন এমন জুতা? আবিষ্কারক বাপ্পা রায় বলেন, “উচ্চমানের ভোল্টেজের সাথে এই জুতোর মধ্যে জিপিএস সিস্টেম বসিয়ে খুব সহজে ট্র্যাকিং করার সুযোগ থাকছে। জুতার আভ্যন্তরীণ সার্কিটে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির সাড়ে চার ভোল্টকে কমপক্ষে ছ’শো এসি ভোল্টেজে রূপান্তর করা হয়েছে। আর এই ছ’শো ভোল্টের জুতা যেকোনও দুষ্কৃতীকে “ধাক্কা” দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট, তা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদীও তিনি। 

বাপ্পা বলেন, সার্কিটটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে মাত্র ১৪০ টাকা। সার্কিটের ভেতরে রয়েছে ডায়োড, ট্রানজিস্টর, ট্রান্সফরমার ইত্যাদি। সার্কিটটি জুতার ভেতর বসিয়ে সেখান থেকে কিছু ধাতব তার জুতার বাইরের গায়ে লেগে থাকবে। ওই তারগুলোয় থাকবে উচ্চমানের ভোল্টেজ। একটি ফুল চার্জের ব্যাটারি শুরুতেই এক হাজার ভোল্টের ধাক্কা দিতে সক্ষম হবে। ব্যাটারি চার্জিং হবে হাঁটতে হাঁটতেই। জুতার ভিতরে থাকা সুইচটি দরকারের সময় অন করে দিলেই উদ্দেশ্য সফল করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি জুতাটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এক ধরনের বিশেষ সেন্সর, যা রাস্তায় চলার সময় কোনও বাধাবিপত্তি থাকলে সেই জুতা থেকে বিশেষ সিগন্যাল আসতে থাকবে।”

পরবর্তীতে এই সেফটি সু’ এর আপগ্রেডেশন করে নতুন নতুন ফিচার যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানালেন আবিষ্কারক বাপ্পা রায়। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ঝালকাঠি আজকাল