• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

ডেঙ্গু রোগীরা ছয়মাস পর্যন্ত কাউকে রক্ত দিতে পারবেন না

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৯  

ডেঙ্গু রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরও তাদের বেশকিছু বিষয়ে  সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এরমধ্যে ডেঙ্গু রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরবর্তী ছয়মাস কাউকে রক্ত দিতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীকে সুস্থ হওয়ার পর আরও দশদিন মশারির ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, রক্তের মাধ্যমে ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়াতে পারে। সংশ্লিষ্ট  চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগীর শরীরে সাত থেকে দশদিনের মতো এর জীবাণু থাকতে পারে। এই দশ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি কোনও এডিসি মশা কামড় দেওয়ার পর কোনও সুস্থ মানুষকে ফের কামড় দিলেও তিনিও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবেন। তাই ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হওয়ার পর তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখতে  সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া, ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হওয়ার পরও পরবর্তী ছয়মাসের ভেতরে কাউকে রক্ত দিতে পারবেন না। কারণ ছয়মাস পর্যন্ত ওই ব্যক্তির শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু থাকতে পারে। তাই কাউকে রক্ত দিলে তার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।

প্রসঙ্গত, এডিস মশার কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে মূলত এডিস এজিপটি প্রজাতির মশাই ডেঙ্গুর ভাইরাস-বাহক হিসেবে কাজ করে।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান, ‘একজন ডেঙ্গু রোগীকে এডিস মশা কামড়ালে তার শরীরের ভাইরাসের মাধ্যমে আরেকজন আক্রান্ত হতে পারে, এজন্য তাকে মশারীর ভেতরে থাকতে হবে সপ্তাহখানেক। আবার জ্বর হয়তো কমে গেছে কিন্তু হঠাৎ করেই প্লাটিলেট কমে গিয়ে তার অবস্থা খারাপ হতে পারে। এসব কারণে তাকে সতর্ক থাকতে হবে প্রায় দশদিন। তবে, এটি একটি ভাইরাস জ্বর। তাই রোগী বেশ কয়েকদিন দুর্বল থাকবেন। এজন্য তাকে অন্তত দশদিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে  তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।’

ডা. জাহিদুর রহমান আরও বলেন, ‘এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই রক্তদানে আগ্রহীরা  আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু কোনও ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির অন্তত ছয়মাস আরেকজনকে রক্ত দিতে পারবেন না।’  

বিষয়টি নিয়ে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল  বলেন, ‘এডিস মশা কামড়ানোর পর সাধারণত ৩ থেকে ১০ দিনের ভেতরে জ্বর আসে। জ্বর নামার তিন দিনের মাথায় অনেক সময় জ্বর ভালো হয় যায়। পঞ্চম বা ষষ্ঠদিনে আবার ফেরতে আসতে পারে, জ্বর নেমে যাওয়ার পরের সময়টা মূলত জটিল সময়। এ সময় শকে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এতে প্লাটিলেটও কমতে থাকে। জ্বর আসার আগের দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত মানুষের রক্তে ডেঙ্গুর ভাইরাস সক্রিয় থাকে। এই সময় তাকে এডিস মশা কামড়ালে সেই মশা জীবাণু বহনে সক্ষম হবে। তাই জ্বর আসার পর সাতদিনের সঙ্গে আরও তিন দিন মশারির ভেতরে তাকে থাকতে হবে।’

ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল আরও বলেন, ‘মানুষ থেকে মানুষে রক্তদানের মাধ্যমেও ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ হওয়ার ছয়মাস পর পর্যন্ত কাউকে রক্ত দিতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জ্বরের সপ্তম দিনের পর থেকে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে এলে অতিরিক্ত তরল খাবারের প্রয়োজন হয় না। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে দিনে দুই লিটার পানি পান করতে হবে।’ তবে, বিশেষ কোনও জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলেও তিনি জানান।

ঝালকাঠি আজকাল