ক্ষুদ্র গাম্বিয়ার নজিরবিহীন ও সাহসী পদক্ষেপ
গাম্বিয়া। রাষ্ট্রীয় নাম গাম্বিয়া ইসলামি প্রজাতন্ত্র। পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট একটি দেশ। আফ্রিকা মহাদেশের মূল ভূখন্ডের ক্ষুদ্রতম এ দেশটির উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে সেনেগাল দ্বারা পরিবেষ্টিত। আর পশ্চিমে রয়েছে মহাসাগর, অথৈই নীল জলরাশির আটলান্টিক মহাসাগর। গাম্বিয়া নদী থেকেই দেশটির নামকরণ। নদীটির দেশের মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হয়েছে। আর এই নদীতে কেন্দ্র করেই মূলত গাম্বিয়া। সাগর উপকূল থেকে প্রায় মহাদেশের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার অভ্যন্তর পর্যন্ত চলে গেছে। তবে এর সর্বোচ্চ প্রস্থ মাত্র ৫০ কিলোমিটার। বন্দর শহর বাঞ্জুল দেশটির রাজধানী। সেরেকুন্দা দেশের বৃহত্তম শহর। আয়তন মাত্র ১০ হাজার ৩৮০ বর্গ কি.মি.। বাংলাদেশের মোট আয়তনের চৌদ্দ ভাগের এক ভাগ।
ক্ষুদে এই রাষ্ট্রটিই প্রমাণ করে দিল- ‘মানবতার জন্য শুধু কথার বুলি আওরিয়ে নয়, বাস্তবায়ন জরুরী’।
বর্তমানে স্যোশাল মিডিয়া থেকে চায়ের আড্ডা, রোহিঙ্গা শিবির থেকে লোকালয় সর্বত্র আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি। কারণ আয়তনে ছোট হলেও দেশটি যা করেছে, তা করতে পারেনি বিশ্বের অনেক বাঘা রাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে বিশ্বের অন্য রাষ্ট্রগুলো যখন একের পর এক কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছে তখন গাম্বিয়া ভাগ্যাহত রোহিঙ্গাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে। অনেক পরাশক্তির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক বিচার আদলতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়েছে দেশটি।
আফ্রিকার অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো গাম্বিয়াও দাস প্রথার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল শতাব্দীর পর শতাব্দী। গাম্বিয়ার লিখিত ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবম ও দশম শতাব্দীতে এখানে আরব মুসলমানরা ব্যবসায়িক কারণে আসতে শুরু করে। দাস প্রথার গোড়াপত্তন তাদের হাত ধরেই হয়। তখন গাম্বিয়া নামে কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিল না। এটি ছিল মালি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত। চৌদ্দ শতক থেকে দেশটি ধীরে ধীরে গাম্বিয়া নামে পরিচিত হতে শুরু করে।
ষোল শতকের শেষের দিকে গাম্বিয়ায় পর্তুগিজ বণিকদের আগমন শুরু হয়। এরপর আসে ব্রিটিশরা। তারপর ফরাসিরা। সতেরো এবং আঠারো শতকে গাম্বিয়ার দখল নিয়ে ফরাসি এবং ব্রিটিশদের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ব্রিটিশরা জয়ী হয় এবং উনিশ শতকে এটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। তখন এটি ব্রিটিশ গাম্বিয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৯৬৫ সালে দেশটি স্বাধীন হয়। দাওদা জাওরাকে গাম্বিয়ার জাতির জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে দেশটি ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। জাওরা হন প্রজাতন্ত্রী গাম্বিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি। স্বাধীনতার পর দেশটিতে বেশ স্থিতিশীলতা বজায় ছিল। কিন্তু ১৯৮১ সালে গাম্বিয়ার স্থিতিশীলতার গায়ে কালিমা লেপন করে সেনেগাল সরকার। তারা সামরিক বাহিনী প্রেরণ করে একরকম জোর করেই জাওরাকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করে এবং গাম্বিয়াকে সেনেগাম্বিয়া কনফেডারেশনে অন্তর্ভূক্ত করে। ১৯৮৯ সালে কনফেডারেট সরকারের পতন ঘটে এবং জাওরা পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসেন। কিন্তু ১৯৯৪ সালে জাওরা সামরিক অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয় দ্বিতীয়বারের মতো। তাকে রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অপসারণ করে সামরিক নেতা ইয়াহিয়া জাম্মেহ। এরপর জাম্মেহ ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দেয়। বলাবাহুল্য তিনিই নির্বাচনে বিজয়ী হন এবং দেশটিকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালে ইয়াহিয়া জাম্মেহকে পরাজিত করে আদামা বারো ক্ষমতা লাভ করেন। পাঁচ বছর মেয়াদে তিনিই বর্তমানে গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি।
কৃষি প্রধান এ দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় বিশ লাখ। নাগরিকদের অধিকাংশই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশ সুন্নি মুসলিম। চীনাবাদাম এখানকার প্রধান উৎপাদিত শস্য এবং রপ্তানি দ্রব্য। তবে পর্যটন শিল্প থেকেও তাদের আয় হয়। আটলান্টিক মহাসাগরের তীরের গোল্ডেন বিচ, উপনিবেশিক আমলের দুর্গ, গাম্বিয়া নদী, এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিচিত্র পাখপাখালি দেখতে প্রতি বছর পর্যটকেরা এদেশে আসেন।
কথায় বলে বেদনাহত মানুষই বেদনার ভাষা বোঝে। তাইতো গাম্বিয়ার জরাজীর্ণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তাম্বাদু রোহিঙ্গাদের হৃদয়ের আর্তি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি শুনেছেন। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই মামলার।
জাতিগত শুদ্ধির নামে মিয়ানমারের সামরিক শাসকেরা রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ আর দেশছাড়া করার মতো জঘন্য অপরাধ করেছে। এই অপরাধের সকল আলামত হাতে পেয়েও অনেক মুসলিম দেশ যখন সাত-পাঁচ ভেবেছে তখন গাম্বিয়া চুপ করে বসে থাকেনি। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবতাবিরোধী আর গণহত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেছে। অর্থাৎ দায় ছিল অনেকেরই, কিন্তু তা মেটাচ্ছে গাম্বিয়া।
আজ যে গাম্বিয়া অনন্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের ইতিহাস কিন্তু মোটেও মসৃণ নয়। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে তারা আজকের এই গণতান্ত্রিক অবস্থানে এসেছে।
ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হলেও দেশটিতে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অধিকারও রক্ষিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া। তিনি বলেন, ‘পোশাকের ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে না। আমরা একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হব, যেখানে সব নাগরিক ও অনাগরিকের অধিকারও রক্ষিত হবে।’
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটনের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আফ্রিকার এই ক্ষুদ্র দেশ। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এই মামলার ওপর তিন দিনব্যাপী শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইসিজে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই আদালতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
সাধারণত দুই দেশের মধ্য বিদ্যমান কোনও বিবাদ নিরসনের কাজ করে থাকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। এই আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলা অনেক ভ্রুকুটির জন্ম দিয়েছে। কেননা, মিয়ানমার থেকে প্রায় ৭ হাজার মাইল দূরে গাম্বিয়া। রোহিঙ্গা সংকটের সঙ্গে গাম্বিয়ার কোনও ধরনের দৃশ্যমান যোগসূত্রও নেই।
তাহলে কেন এত দূরের একটি সংঘাতের বিচার নিশ্চিতের জন্য আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটি উদ্যোগী হল?
এ প্রশ্নের উত্তর একটাই। শুধু নিজেদের দেশই নয়, গাম্বিয়া চিন্তা করে ভিন্ন দেশের নির্যাতিত মুসলমানদের নিয়েও। এ এক নজিরবিহীন ও সাহসী পদক্ষেপ।
ঝালকাঠি আজকাল- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ইফতারে রাখুন স্বাস্থ্যকর চিকেন স্যান্ডউইচ
- মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছে এআই!
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- স্থলভাগে গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম, যুক্ত হচ্ছে তিন বিদেশী কোম্পানি
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- ফার্স্টলুকে পূর্বাভাস, গ্যাংস্টার রূপে আসছেন শাকিব খান
- থামছে না অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ঘরে ফিরলেন আরও ১০ জন
- দুস্থ নারীদের সরকারি চাল পাচার, ২ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের খাবার
- সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেসে আসছে বিকট শব্দ, সীমান্তে আতঙ্ক
- লিচু বাগানে মিললো ১৮ কেজি গাঁজা
- বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- মঠবাড়িয়ায় ৮‘শ ৯৬ টি সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রয়
- মাদারীপুরে সাজ্জাপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
- বরিশালে রমজান উপলক্ষ্যে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমান ডিম বিক্রয়
- বরিশালে বিপুল পরিমান কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৮০
- উজিরপুরে এক কেজি গাঁজাসহ মাদক সম্রাট গ্রেফতার
- কথা না শোনায় স্বামীকে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেন রুনা
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৩ নির্দেশনা
- প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
- কুড়িগ্রাম হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে
- কান্না থামাতে মুখ চেপে ধরলে মারা যায় শিশু নুসরাত
- জাতিসংঘ বাংলাদেশে জলবায়ু কর্মকান্ডে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে
- রমজান উপলক্ষে ঝালকাঠিতে চলছে সুস্বাদু মোটা মুড়ি ভাজার উৎসব
- আল্লাহর কাছে মর্যাদা ও সওয়াবে নারী-পুরুষের সাম্য
- প্রধানমন্ত্রী যুবসমাজকে গড়ে তুলতে কর্মমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন
- ঝালকাঠিতে নানা আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস পালিত
- আসছে ১৫০০ টন ভারতীয় পিঁয়াজ
- সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চাকরি
- একজন মুসলিম যেভাবে রমজানের প্রস্তুতি নিবেন
- ঝালকাঠিতে নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালিত
- রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ প্রধানমন্ত্রীর ১৫ নির্দেশনা
- নলছিটিতে হত্যা মামলায় ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার-২
- রোজার আগে যেসব প্রস্তুতি নেবেন
- যেকোনো গণিতের সমাধান করে দেবে অ্যাপ
- ঈদ সামনে রেখে চাঙ্গা অর্থনীতি
- চট্টগ্রামের সুগার মিলের আগুনে এক লাখ টন চিনি পুড়ে ছাই
- ঝালকাঠিতে মহিলা কলেজের ৬তলা নতুন ভবনের উদ্বোধন
- এ বছর ফিতরার হার নির্ধারণ
- ঝালকাঠিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত
- নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে ভোজ্যতেল ছাড়ল এস আলম গ্রুপ