• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২১  

ঊনবিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ৬৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র আবিষ্কারের জন্য তিনি বিখ্যাত।

আলবার্ট আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির উরটেমবার্গের উলম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির প্রিন্সটন শহরে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। এর মাঝে তিনি সারা‌বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছিলেন নিজের বু‌দ্ধির জোরে।

১৯২১ সালে আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার পুরস্কার লাভের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদান এবং বিশেষত আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কীত গবেষণার জন্য।

আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। সবচেয়ে বিখ্যাত আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বলবিজ্ঞান ও তড়িচ্চৌম্বকত্বকে একীভূত করেছিল এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব অসম গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে আপেক্ষিকতাভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, কৈশিক ক্রিয়া, ক্রান্তিক উপলবৎ বর্ণময়তা, পরিসাংখ্যিক বলবিজ্ঞানের চিরায়ত সমস্যাসমূহ ও কোয়ান্টাম তত্ত্বে তাদের প্রয়োগ, অণুর ব্রাউনীয় গতির একটি ব্যাখ্যা, আণবিক ক্রান্তিকের সম্ভ্যাব্যতা, এক-আণবিক গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম (যা ফোটন তত্ত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল), বিকিরণের একটি তত্ত্ব যার মধ্যে উদ্দীপিত নিঃসরণের বিষয়টিও ছিল, একটি একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের প্রথম ধারণা এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ।

১৯৩৩ সালে এডলফ হিটলার জার্মানিতে ক্ষমতায় আসেন, সে সময় তিনি বার্লিন একাডেমি অব সায়েন্সের অধ্যাপক ছিলেন। ইহুদি হওয়ার কারণে আইনস্টাইন সে সময় দেশত্যাগ করে আমিরেকায় চলে আসেন এবং আর জার্মানিতে ফিরে যাননি। আমেরিকাতেই তিনি থিতু হন এবং ১৯৪০ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জার্মনি ‘ভিন্ন ধরনের অসম্ভব শক্তিশালী বোমা বানাতে পারে’ মর্মে সতর্কতা উচ্চারণ করে আমেরিকাকেও একই ধরনের গবেষণা শুরুর তাগিদ দেন। তার এ চিঠির মাধ্যমেই ম্যানহাটন প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। পরে ব্রিটিশ দার্শনিক বার্টান্ড রাসেলের সঙ্গে মিলে আণবিক বোমার বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন। ১৯৫৫ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডভান্সড স্টাডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

আইনস্টাইনের গবেষণাকর্মগুলো বিধৃত রয়েছে ৫০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং কিছু বিজ্ঞান-বহির্ভূত পুস্তকে। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে ‘শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি' হিসেবে ঘোষণা করে।

এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি ভোট গ্রহণের মাধ্যমে জানা গেছে, তাকে প্রায় সবাই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সাধারণ সংস্কৃতি এবং দৈনন্দিন ব্যবহারে মেধাবী এবং প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে বা কোনো কিছুকে বুঝাতে এখন তাই ‘আইনস্টাইন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এটি মেধার সমার্থক।

ঝালকাঠি আজকাল