• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

অর্থ পাওয়া যাবে, উন্নয়নের জন্য কাজ করুন: বঙ্গবন্ধু

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২০  

উপকূলীয় উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহজেই পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘একটি বন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’ এসময় তিনি কর্মচারীদের উপকূলে বাঁধের ওপর হোগলা গাছ লাগাতে বলেন। ১৯৭২ সালের  ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা আলোচনা করেন। সুন্দরবনের বুড়িখোয়ালনী নদীতে নঙ্গর করা ইনভেস্টিগেটর জাহাজে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও প্রাণিসম্পদ দফতরমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ ও গবাদি পশু দফতরের মন্ত্রী সোহরাব হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্প, বন সংরক্ষণ ও বন্য পশুর রক্ষণাবেক্ষণ দেখার জন্য ওই এলাকা সফর করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের কর্মকর্তাদেরকে সাগর গর্ভ থেকে জমি উদ্ধারের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখতে বলেন। তিনি উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ আগ্রহ দেখান। এছাড়া কর্মকর্তাদের তিনি মনপুরাসহ অন্যান্য দ্বীপে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করতে বলেন। এ ব্যাপারে মনপুরা দ্বীপের একটি জরিপ প্রতিবেদন শিগগিরই প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।

দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ ডিসেম্বর ১৯৭২

পাকিস্তান বাধা সৃষ্টি করছে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, ‘বিশ্ব সংস্থা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নিয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভের যোগ্য, এ সম্পর্কে বিশ্বসভায় ঘোষণা এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘এমনকি পাকিস্তানও সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আর্জেন্টিনা ও অন্যান্য ১৫টি দেশের  উত্থাপিত ও গৃহীত প্রস্তাবের ব্যাখ্যা  দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য কতজন বন্দিকে আদালতের সামনে হাজির করা হবে, তার সংখ্যা এখনও ঠিক করা হয়নি। তবে বিনাবিচারে কোনও যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।’ জেনেভা কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদের নিরপেক্ষ বিচার হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাকিস্তানে মাত্র দুই লাখ বাঙালি রয়েছে বলে পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্রের দেওয়া এক বিবৃতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি যে, পাকিস্তানে আটক বাঙালির সংখ্যা পাঁচ লাখের মতো।’ এ ব্যাপারে প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক রেডক্রসকে আহ্বান জানান।

দৈনিক বাংলা, ৩ ডিসেম্বর ১৯৭২

বিনাবিচারে কোনও যুদ্ধবন্দিকে ছাড়া হবে না

যুদ্ধবন্দিদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে আমাদের নীতি সম্পর্কে ভুল বুঝাবুঝির কোনও সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার সবসময়ই আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে প্রস্তুত। আমরা শুধু এই আশায় আছি, আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য পাকিস্তান উপযুক্ত ও যথার্থ পরিবেশ সৃষ্টি করে সহযোগিতা করবে। একমাত্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েই এই দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র তৈরি করা সম্ভব।’

নিরাপত্তা পরিষদকে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান

আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে। স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ পাওয়ার যোগ্য।’ তিনি আশা করেন যে, নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে যথাসম্ভব শিগাগরই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের প্রথম প্রস্তাব কার্যকরী হলে দ্বিতীয় প্রস্তাব বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সরকার সচেষ্ট হবে।’

ঝালকাঠি আজকাল