• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

বিপদে পড়া মানুষকে সাহায্য করার উপকারিতা

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২  

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, বন্যা-জলোচ্ছ্বাসসহ নানান বিপদে আক্রান্ত মানুষের উপকারে এগিয়ে আসা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। ইসলামের শিক্ষাও এমনই। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সম্পর্কে চমৎকার ঘোষণা দিয়েছেন। কী সেই ঘোষণা?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়ার কোনো একটি বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ তাআলা আখেরাতে তার একটি (কঠিন) বিপদ দূর করে দেবেন। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, বানবাসী, বন্যা-ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-পাহাড় ধ্বস ও ভূমিকম্পে আক্রান্ত বিপদগ্রস্ত মানুষের উপকারে এগিয়ে আসা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতে হাদিসের পুরো বর্ণনাটি এমন-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

১. যে লোক দুনিয়া থেকে কোনো ঈমানদারের কোনো মুসিবাত দূর করে দেবে, আল্লাহ তাআলা বিচারের দিন (পরকালে) তার থেকে মুসিবাত সরিয়ে দেবেন।

২. যে লোক কোনো দুঃস্থ (অসহায়) লোকের অভাব দূর করে দেবেআল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দুরবস্থা দূর করে দেবেন।

৩. যে লোক কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন।

৪. বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করে আল্লাহ ততক্ষণ তার সহযোগিতা করতে থাকেন।

এরপর নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের ব্যক্তি জীবনের কিছু আমলের নসিহত পেশ করেন এভাবে-

৫. যে লোক জ্ঞানার্জনের জন্য রাস্তায় বের হয়, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন।

৬. যখন কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর ঘরসমূহের কোনো একটি ঘরে একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং একে অপরের সঙ্গে মিলে (কুরআন) অধ্যয়নে লিপ্ত থাকে তখন তাদের উপর শান্তিধারা অবতীর্ণ হয়। রহমত তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং ফেরেশতাগণ তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন।

আর আল্লাহ তাআলা তার কাছাকাছিদের (অবস্থানকারী ফেরেশতাদের) মধ্যে তাদের কথা আলোচনা করেন। আর যে লোককে আমলে পিছনে সরিয়ে দেবে তার বংশ (মর্যাদা) তাকে অগ্রসর করে দেবে না।’ (মুসলিম)

মানুষের ভাবনা বিষয়

মানুষের মুসিবত দূরে দেওয়া, দুঃস্থ মানুষের অভাব দূর করে দেওয়া, বিপদগ্রস্ত অন্য ভাইয়ের সাহায্য সহযোগিতা করা, সহযোগিতামূলক যে কোনো কাজে নিয়োজিত থাকা ব্যক্তিদের দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন স্বয়ং আল্লাহ।

শুধু তা-ই নয়, যারা বিপদগ্রস্ত মানুষের উপকারে নিয়োজিত থাকবে আল্লাহ তাআলা তার কাছাকাছি ফেরেশতাদের মধ্যে এসব উপকারি মানুষ সম্পর্কে আলোচনা করবেন তাদের দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন বানবাসী, বন্যা-ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-পাহাড় ধ্বস ও ভূমিকম্পে আক্রান্ত মানুষের উপকারে, সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে মানুষের জন্য এরচেয়ে বড় সৌভাগ্যের ঘোষণা আর কী হতে পারে!

সুতরাং মুমিন মুসলমানসহ সবার উচিত, বিপদগ্রস্ত মানুষের উপকারে এগিয়ে আসা। হাদিসের ঘোষণায় প্রতি বিশেষ আমল করা। নবিজী ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদার অধিকারী হওয়া।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে বিপদগ্রস্ত মানুষের উপকারে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঝালকাঠি আজকাল