• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

রাজাপুরের কাঠিপাড়া গণহত্যা দিবস ১৭ মে 

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২২  

রাজাপুর প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কাঠিপাড়া গণহত্যা দিবস আগামীকাল ১৭ মে। ১৯৭১ সালের এই দিন সকালে এখানে মুক্তিকামি হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫০ জনেরও বেশি লোককে ধরে এনে হত্যা করে মাটি চাপা দেয় পাকবাহিনী। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে হলেও বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদে এখানকার বধ্যভূমি সংরক্ষনের কাজ শেষের পথে। একাত্তরের স্মৃতি আর শোকগাঁথা এ বধ্যভূমি সংরক্ষিত হওয়ায় শহীদের মর্যাদা ফিরে পেয়েছে। 

কাঠিপাড়া গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বধ্যভূমিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রথান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক জনাব, মোঃ জোহর আলী। এছাড়াও আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় বধ্যভূমির শহীদ বেদীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের আয়োজন থাকছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো ঝালকাঠির রাজাপুরের মুক্তিকামি জনতা দেশ রক্ষার জন্য ঝাপিয়ে পরে। একাত্তরের নয় মাস এখানকার বিভিন্ন স্থানে বধ্যভূমিতে গণহত্যা, লুট আর নারী নির্যাতনসহ হানাদার বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালায়। রাজাপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি কাঠিপাড়া গণকবর। এক যুগ আগে ২০১০ সালে এ গণকবর খুড়ে ২৫ শহীদ ব্যক্তিদের মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৭ মে একদিনেই এখানে একই পরিবারের ২০ জনসহ ৫০ জনেরও বেশি নিরীহ বাঙ্গালী ও মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এই বর্বর ঘটনা ঝালকাঠির মানচিত্রে সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দাবি রাখে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (সাবেক) শাহ আলম নান্নু বর্তমান সরকারকে সাধুবাদ দিয়ে জানান, নতুন প্রজন্মে কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে কাঠিপাড়া বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা অত্যান্ত প্রয়োজনীয় ছিল। আর এটি সরকারের কাছে প্রত্যাশা ছিল দীর্ঘ দিনের। 

উল্লেখ্য, শুক্তাগড় ইউনিয়নের কাঠিপাড়ায় যুদ্ধকালীন সময়ে ওই গ্রামের ২৫ জনেরও বেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে হত্যা করে এ গর্তে চাপা দিয়ে রাখা হয়। এরা হলেন- কাঠিপাড়া গ্রামের জীতেন্দ্রনাথ বড়াল, অনুকূল বড়াল, কালিকান্ত মন্ডল, ব্রজেন্দ্র নাথ হালদার, সতীশ চন্দ্র, ক্ষিতীশ চন্দ্র হালদার, ললিত চন্দ্র হালদার, পার্শ্ববর্তী নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের যোগেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, কামিনী হালদার, হরিমোহন হালদার, কার্তিক চন্দ্র হালদার, যোগেশ্বর মিস্ত্রি, ও পারবতী মিস্ত্রি এবং নৈকাঠী গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, অমরকান্ত নাথ, ক্ষেত্র মোহত অধিকারী, সুরেন্দ্রনাথ গায়েন, সূর্য ঘরামি, মধুসুধন ও কালা চাঁদসহ ২৫ জনেরও বেশি হিন্দু লোকদের নির্মমভাকে হত্যা করা হয়। 
 

ঝালকাঠি আজকাল