• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

বাসে চেপে কলকাতা থেকে লন্ডন: যেমন ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম রুট

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২১  

১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকের কথা। 'অ্যালবার্ট' নামে এক ডাবল-ডেকার বাস ভারত ও যুক্তরাজ্যে ১৫ বার আসা-যাওয়া করেছে। এ ছাড়া চারবার আসা-যাওয়া করেছে লন্ডন ও সিডনির মধ্যে। বিভিন্ন সূত্রের এমনটাই দাবী।

লন্ডনের ভিক্টোরিয়া কোচ স্টেশনে বাসটিতে যাত্রী ওঠার একটি ছবি সম্প্রতি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেছে। কেননা, ওই বাসে লেখা ছিল 'লন্ডন-কলকাতা-লন্ডন' রুটের কথা, যেটি নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ বাস রুট।

জানা যায়, কলকাতা ও লন্ডনের মধ্যে ভ্রমণপ্রতি ভাড়া ছিল ৮৫ পাউন্ড বা প্রায় ৭ হাজার ৮৮৯ রূপি, যা কি না বাসটির যাত্রা শুরুর সময়কার তুলনায় যথেষ্ট বেশিই।

গণমাধ্যম সেন্ট্রাল ওয়েস্টার্ন ডেইলি জানিয়েছে, শুরুতে এটি একটি পাবলিক বাস ছিল। ২১ বছরের বিশ্বস্ত সেবা প্রদান শেষে এক দুর্ঘটনায় এটি আর ব্যবহারের উপযোগী থাকেনি। অ্যান্ডি স্টুয়ার্ট নামে এক ব্রিটিশ পর্যটক দেশে ফিরছিলেন তখন। ১৯৬৮ সালের মে মাসে তিনি বাসটি কিনে নেন। তারপর স্টুয়ার্ট এটিকে একটি 'ভ্রাম্যমাণ বাড়ি'তে পরিণত করেন। সে বছরেরই অক্টোবরে আরও ১৩ জন সঙ্গীকে নিয়ে ওই বাসে সিডনি থেকে ভারত হয়ে লন্ডনে, ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তিনি।

হাই রোড ফর ওজ দাবী করেছে, 'অ্যালবার্টে'র প্রথম যাত্রা শুরু ৮ অক্টোবর ১৯৬৮, মঙ্গলবার, সিডনির মার্টিন প্লেসের জিপিওর (সাধারণ ডাকঘর কার্যালয়) সামনে থেকে। ১৩২ দিন পর, ১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার লন্ডনে পৌঁছায় বাসটি। ওয়েবসাইটটি এই ঘটনাকে একটি 'এপিক অ্যাডভেঞ্চার' হিসেবে অভিহিত করেছে।

এদিকে, ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাসটি আরও ১৪ বার সিডনি থেকে লন্ডন আসা-যাওয়া করেছে বলে জানা গেছে।

লন্ডন, কলকাতা ও সিডনির মধ্যে বাসটির নিয়মিত চলাচলের একটি বার্ষিক সময়সূচী প্রকাশ করত অ্যালবার্ট ট্যুরস নামে এক সংস্থা। হাই রোড ফর ওজ বলছে, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ট্রিপগুলো সিডনি-লন্ডন আসা-যাওয়া করত। অন্যদিকে, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ট্রিপগুলো চলত লন্ডন-কলকাতার মধ্যে। ভারতে পৌঁছে বাসটি দিল্লি, আগ্রা, বেনারস ও কলকাতায় থামত।

সময়সূচীর দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৭২ সালের ২৫ জুলাই লন্ডন থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়া বাসটি কলকাতায় পৌঁছায় একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। তার মানে, সে সময় ৪৯ দিন লেগেছিল 'অ্যালবার্টে' চেপে লন্ডন থেকে কলকাতা যেতে। যথেষ্ট রোমাঞ্চকরই বটে; তাই না?

ওই বাসে কিছু বাড়তি 'বিলাসবহুল সার্ভিস'ও ছিল; যেমন, লোয়ার ডেকে একটি রিডিং ও ডাইনিং রুম, আলাদা আলাদা স্লিপিং বাঙ্ক, যাত্রীদের উষ্ণতা দিতে ফ্যান হিটার, এবং দীর্ঘ এ যাত্রাপথে বাসের ভেতর বাড়ির অনুভূতি দিতে চমৎকার সাজসজ্জা।

দেড় শতাধিক রাষ্ট্র-সীমানা পেরিয়ে যেত বাসটি; তবে কোনোবারই কোনো সীমান্তে 'গুরুতর তদন্ত কিংবা ঘুষ দেওয়ার জন্য' থামতে হয়নি। বরং চলতি পথে সব দেশ থেকেই একটি 'ফ্রেন্ডলি অ্যাম্বাসেডর' বা 'বন্ধুত্বের দূত' ট্যাগ পেয়েছিল এটি।

  • সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস
ঝালকাঠি আজকাল