• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাড়ছে বরাদ্দ

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৩  

ভোটের বছরের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় অঙ্কের ভর্তুকি থাকছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে বরাদ্দও। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এবার বিদ্যুৎখাতে সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার আধুনিকায়ন গুরুত্ব পাচ্ছে। এদিকে জ্বালানিখাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলন, সঞ্চালন পাইপলাইন বৃদ্ধি অগ্রাধিকার পাবে।

জ্বালানির বৈশ্বিক অস্থিরতায় দায় যারই হোক, দিনশেষে বাড়তি দামের খড়গ চাপছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধেই। চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে (আগস্টে) সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়। যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বছরের শুরুতে কোনো কোনো খাতে গ্যাসের দামও তিন গুণ বাড়ে। এদিকে টানা তিন মাস ৫ শতাংশের বেশি হারে গ্রাহকের ঘাড়ে বিদ্যুতের বাড়তি দামের বোঝা চাপানো হয়।

 ভোক্তার এমন নাজুক অবস্থার মধ্যেই আরও একটি বাজেট আসছে। এর মধ্যেই আবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সংস্কার প্রস্তাবের বিপরীতে প্রতিমাসেই দাম সমন্বয় আর ভর্তুকি থেকে সরে আসার কথা প্রতিনিয়তই বলে আসছেন নীতিনির্ধারকরা।
 
কাজেই আসছে বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকিনীতির কী হবে? আর দাম নাগালে রাখতে নির্বাচনী বছরের বাজেটদর্শন কেমন হবে? যার জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এই বাজেটের একটি বড় অর্থ ভর্তুকিতে যাবে। এখনও বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ১২ টাকার মতো আমাদের ব্যয় হচ্ছে। যেখানে আমরা ৭ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করছি। কাজেই আমাদের সেই ঘাটতিটি তো পূরণ করতে হবে।’
 
এদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি নির্বাচনী বছর, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই সরকার হয়তো বিদ্যুতের দাম আর বাড়াতে চাইবে না। সুতরাং সরকার সম্ভবত এ খাতে ভর্তুকি দেবে।’
 
বরাবরের মতো এবারের বাজেটেও শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে থাকছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। আগেরবারের তুলনায় বরাদ্দ বাড়িয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য ৩৮ হাজার কোটি টাকা আর জ্বালানি বিভাগের জন্য ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। পায়রা, রামপালের পর এবার মাতারবাড়ি-রূপপুরের বিদ্যুৎও জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার পালা। অর্থাৎ, সেই বিবেচনায় এই বাজেটে সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামোর উন্নয়ন গুরুত্ব পাচ্ছে।
 
অন্যদিকে নিজস্ব গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জ্বালানিতে তেল-গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন আর মজুত সক্ষমতা বাড়ানো অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
 
নসরুল হামিদ বলেন, প্রায় ৫৬ শতাংশ বাজেট বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণের ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গ্যাসফিল্ডে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ড্রিলিং হবে। সেই সঙ্গে পুরো গ্যাস স্ট্রিম, আপস্ট্রিম থেকে ডাউনস্ট্রিম পর্যন্ত অটোমেশনে পরিণত করা হবে।
 
তবে শুধু বরাদ্দ বাড়ানো কিংবা ভর্তুকি নয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতকে গ্রাহকবান্ধব করে সামগ্রিকভাবে সংস্কারের তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘সরকারকে এ খাত থেকে মুনাফা করার নীতি থেকে সরে আসতে হবে। সেই সঙ্গে ভর্তুকি থাকা না-থাকার বিষয়টি অর্থবহ হবে না, যদি-না এ খাতের যত রকমের অন্যায়, অযৌক্তিক ও লুন্ঠনমূলক ব্যয় মুনাফা সম্পৃক্ত হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়।’
 
এদিকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, ‘প্রকল্পগুলোতে যতটা সম্ভব কম ডলার ব্যয় করতে হবে। একই সঙ্গে যেসব নতুন প্রকল্পে অনেক ডলার ব্যয় হবে, সেগুলো নিরুৎসাহিত করতে হবে। অর্থাৎ, সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অর্থায়ন করতে হবে।’
 
এ ছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঝালকাঠি আজকাল