হত্যা মামলায় চট্টগ্রামে যুবদল নেতা মুরাদ গ্রেফতার

ঢাকায় পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
এর আগে, সোমবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও থানার চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মুরাদ চৌধুরী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্ব সরফভাটা এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

র‍্যাব জানায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মুরাদ চৌধুরী ও তার অনুসারীরা। কাকরাইলে সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে নয়াপল্টন বিএনপি পার্টি অফিস সংলগ্ন ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলার উদ্দেশে অগ্রসর হন তারা। অগ্রসরমান দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায় এবং অপর অংশটি ছাত্রদল নেতা আমান ও জাকির হোসেন জসিমের নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের অপর প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়। রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পর ছাত্রদলকর্মীরা সেখানে পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন।

এ সময় পশ্চিম প্রান্তে পুলিশ সদস্যদের সাহায্য করার উদ্দেশে অপর প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হন। পশ্চিম দিকে অগ্রসরমান পুলিশ সদস্যদের ওপর ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম এবং মুরাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। ইটের আঘাতে পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে যান। এমন সময় তাকে হত্যার উদ্দেশে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। আঘাতের ফলে পারভেজ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তার নিথর দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে।

পারভেজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকেন। আঘাতের একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম এবং মুরাদ চৌধুরী তাদের অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও থানার চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন মুরাদ। তার বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালি থানা ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বেআইনি সমাবেশ, নাশকতা, হত্যাচেষ্টাসহ দুটি মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।