• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

হাত বেঁধে যুবককে নির্যাতন, ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরে ২২ ঘণ্টা পর

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩  

বাগেরহাটের রামপালে অটোরিকশা চুরির অপবাদে শেখ আব্দুল্লাহ নামে এক যুবককে হাত বেঁধে প্রায় ২২ ঘণ্টা  নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি স্থানীয় বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর সামনে ওই যুবককে নির্যাতনের পর চোখ তুলে ফেলারও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না জানানোর শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয় আব্দুল্লাকে।
নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক।

ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরের পিছনে আম গাছে বেঁধে এক যুবককে মারধর করছে কয়েকজন যুবক। একপর্যায়ে দুই পায়ের তলায় লাঠি দিয়ে পেটাতে দেখা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে রামপাল উপজেলার ব্রী-চাকশ্রি এলাকায়। নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ বাগেরহাট সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ এলাকার শেখ গফুরের ছেলে। তিনি বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ বলেন, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ব্রি চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলীকে আমি ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা ধার দেই। কিন্তু সে আমাকে টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকে। পরবর্তীতে টাকা বাবদ শেখ হাসান আলী তার মালিকানাধীন অটোরিকশাটি আমার কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রতিদিন দুইশ টাকা ভাড়ায় সে অটোরিকশাটি চালাতে থাকে। কিন্তু কয়েকদিন টাকা দেওয়ার পরে আর টাকা দেয় না।

ফলে গত জানুয়ারিতে আমি অটোরিকশাটি নিয়ে বিক্রি করে দেই। পরে এই বিষয় নিয়ে আর কথা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার দুপুরে অটোরিকশায় রামপাল থেকে বাগেরহাট আসার পথে চাকশ্রী নামক স্থান থেকে শেখ হাসান আলী ও চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আবু সালেহসহ কয়েকজন মিলে জোরপূর্বক আমাকে ধরে নিয়ে যায়।  শেখ হাসান আলী বাড়িতে নিয়ে আমাকে নির্যাতন করে। সন্ধ্যার দিকে আমার বন্ধু প্রাইভেটকার চালক আল আমিনকে চাকশ্রী আসার জন্য আমাকে দিয়ে ফোন করায়। পরে আল আমিন গেলে তাকেও বেঁধে রাখে হাসান ও আবু সালেহরা। সারারাত আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে আবুল সালেহ ও হাসানসহ কয়েকজন।

পরে ফাঁকা স্ট্যাম্পে আমার এবং আমার মায়ের স্বাক্ষর রেখে এবং ৩ লাখ টাকার দেওয়ার স্বীকারোক্তি রেখে ছেড়ে দেয়।

শেখ আব্দুল্লাহর মা খালেদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে নির্যাতন করেছে তা মানুষের সঙ্গে কেউ করে না। চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমি আমার ছেলেকে নির্যাতনের বিচার চাই।

প্রত্যক্ষদর্শী শেখ আব্দুল্লাহ‘র বন্ধু প্রাইভেট কার চালক আল আমিন বলেন, আল আমিনের ফোন পেয়ে চাকশ্রী বাজারে গেলে, হাসান ও আবু সালেহ আমাকে বেঁধে রাখে। সারারাত আব্দুল্লাহকে নির্যাতন করে। শুক্রবার দুপুরে আমাদের ছেড়ে দেয়।

বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ জানান, তার সামনে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। আবু সালেহ তার ভাগ্নে নয়।

পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ভিডিওটি আমরা দেখেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্ধার বলেন, আব্দুল্লাহর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে।

ঝালকাঠি আজকাল