• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

ই-অরেঞ্জের সোহেল রানার সবশেষ অবস্থান জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩  

বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ফিরিয়ে আনতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে; তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।

রবিবার (২১ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

এর আগে ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয় জন গ্রাহক চলতি বছরের মার্চ মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

রুলে গ্রাহকদের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গ সম্পৃক্ত বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথী আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ‘গ্রাহক ঠকানো, অর্থপাচারের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে সোহেল রানা, স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথী আক্তারসহ অন্যান্যদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে আবেদনকারীসহ অন্যান্য প্রতারিত গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বণ্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

পরে ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় গত ২ নভেম্বর হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রাথমিক পর্যায়ে এটির মালিকানায় সোনিয়া মেহজাবিন থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা পরিবর্তন করে তার ভাই পুলিশ কর্মকর্তা (বরখাস্ত) শেখ সোহেল রানার স্ত্রী নাজনীন নাহারা বিথীর নামে হস্তান্তর করা হয়। সোনিয়া মেহজাবিন, স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই শেখ সোহেল রানা ও চাচা মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ নগদে টাকা উত্তোলন ও ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং নিজ নামে ক্রয় করার জন্য মোট ১৮.৫৬ কোটি টাকা ই-অরেঞ্জ এর হিসাব হতে স্থানান্তর বা উত্তোলন করেন। তারা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হিসাব থেকে এসব টাকা সরিয়েছেন। গ্রাহকদের অগ্রিম মূল্য পরিশোধিত অর্ডারের কাঙ্ক্ষিত পণ্য সরবরাহ না করে সন্দেহভাজন উল্লিখিত অর্থ তাদের ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও ব্যক্তিগত স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করেছেন মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে; যা প্রতারণার শামিল।

পরবর্তী সময়ে শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় বিষয়ে জানাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ই–অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোহেল রানাকে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। পরে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ঝালকাঠি আজকাল