• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

পাঠ্যবই থেকে ইসলাম বাদ দেয়ার বিষয়টি গুজব

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩  

প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ধর্ম বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে—এমন দাবি করে সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে একটি গোষ্ঠী। তবে এসব দাবির সত্যতা কতটা তা নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেছেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার এক শিক্ষক। অন্য শিক্ষকদের সহায়তায় সেটা প্রমাণও করেছেন তিনি।

ওই শিক্ষক দক্ষিণখালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বই পর্যালোচনা করেন। শিক্ষকদের সহায়তা নিয়ে তিনি দেখান, ইসলাম ধর্ম বাদ দেয়ার দাবিগুলো স্পষ্ট মিথ্যা।

ফেসুবকে ছড়িয়ে পড়া সেই লাইভের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘অনেকে দাবি করছেন, ইসলামের অনেক কিছুই নাকি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ক্লাস টু, থ্রি, ফোর, ফাইভ এবং সিক্সের বিভিন্ন বই থেকে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এবং দেশকে নাস্তিকতার মধ্যে নেয়ার জন্য, ইসলামকে দেশ থেকে মুছে ফেলার জন্য এমনটা করা হয়েছে বলে প্রচার করছে একটি গোষ্ঠী।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়টি আমাদের দেশের অনেক আলেম-ওলামা, ধর্মীয় বক্তা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের বোঝাচ্ছেন। তবে বিষয়টি কতটা সত্য তা যাচাই করার জন্য আমি আজ আমার নিজ গ্রামের দক্ষিণখালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসেছি।’

লাইভের শুরুতেই তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত দক্ষিণখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম এবং বর্তমান অন্যান্য শিক্ষকদের দেখান। পরে তিনি বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা বকুলের সহায়তায় দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বই থেকে প্রমাণ করে দেখান যে, যেসব বিষয় বা অধ্যায় বাদ দেয়ার দাবি তোল হয়েছে তার কোনো সত্যতা নেই।

ওই শিক্ষক একটি ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, প্রচারিত গুজবে বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই থেকে মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর জীবনী বাদ দেয়া হয়েছে। তবে ওই ব্যক্তি শিক্ষকের সহায়তা বই থেকে প্রমাণ করে দেখান, প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ের ৭১ পৃষ্ঠায় ‘সবাই মিলে কাজ করি’ শিরোনামে মহানবী (সা.) এর জীবনীটি সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই থেকে হযরত আবু বকর (রা.) এর জীবনী বাদ দেয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।’ পরে তিনি বই থেকে দেখান, তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ের ৯৯ পৃষ্ঠায় ‘হযরত আবু বকর (রা) এর জীবনী’ আলোচনা করা হয়েছে।

এর পর ওই ব্যক্তি দেখান, চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘হযরত ওমর (রা) এর জীবনী’ বাদ দেয়া হয়েছে বলে কার দাবিটি মিথ্যা। তিনি দেখান চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বইয়ের ৯৭ নম্বর পৃষ্ঠায় খলিফা হযরত ওমর (রা.) এর জীবনী দেয়া আছে।  

পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বই থেকে হযরত মুহম্মদ (সা.) এর বিদায় হজের সংক্ষিপ্ত ভাষণটি বাদ দেয়া হয়েছে এবং তার বদলে ‘বই’ নামে একটি কবিতা সংযুক্ত করা হয়েছে যেটি কোরআনবিরোধী। এমন দাবিও মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন ওই শিক্ষক। তিনি দেখান, পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ৯৫ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘বিদায় হজ’ গল্পটি অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।  

শেষ দিকে তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে দেখতে পেলাম বইগুলো সব নতুন, ২০২৩ সালের। তার মানে এটি আমরা বুঝলাম যে, যারা স্টেজ গরম করছে, ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মিথ্যা দিয়ে ধোঁকা দিচ্ছে, আসলে তারা একটি মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উদ্দেশ্যে তারা এটি করছে।’ এ সময় তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

ঝালকাঠি আজকাল