• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

রমজান উপলক্ষে ঝালকাঠিতে চলছে সুস্বাদু মোটা মুড়ি ভাজার উৎসব

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৪  

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: সুস্বাদু ও হাতে ভেজে মুড়ি উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে সুপরিচিত ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন।উপজেলার দপদপিয়া উইনিয়নের ২০টি গ্রামে রাসায়নিক মুক্ত লবন পানি দিয়ে তৈরি হয় হাতে ভাজা  সুস্বাদু মুড়ি। রমজান উপলক্ষ্যে এ গ্রামগুলোতে চলছে নাখোচি ধানের তৈরি মোটা মুড়ি ভাজার উৎসব।এখানকার উৎপাদিত মুড়ি দক্ষিণাঞ্চলবাসীর চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।
দেশের বাজারগুলোতে যখন মেডিসিন মিশ্রিত চিকন মুড়িতে সয়লাব,ঠিক তখন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের রাজাখালি,দপদপিয়া, তিমিরকাঠি, ভরতকাঠি ও জুরকাঠিসহ ২০টি গ্রামের চলছে হাতে মোটা মুড়ি ভাজার উৎসব। প্রায় ২ শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হাতে মোটা মুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।রমজান মাস উপলক্ষ্যে ১ মাস আগে থেকেই চলছে এ মুড়ি ভাজার কার্যক্রম। এসব গ্রামের প্রায় ২শ' পরিবার যুগ যুগ ধরে মুড়ি ভেজে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। প্রতিটি ঘরে গভীর রাত থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত চলে মুড়ি ভাজার কাজ। রমজানে মুড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এ কাজে সময় দিচ্ছেন।

ক্ষতিকারক মেডিসিন ছাড়াই চালগুলো শুধু লবন ও পানি দিয়ে জলন্ত উনুনে হাতে ভেজে তৈরি করা হয় সুস্বাদু এই মুড়ি। বর্তমানে এখানকার এককেজি মুড়ি পাইকারি ৯০-১১০ টাকা এবং খুচরা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নিজস্ব পুঁজি না থাকায় আড়তদারদের থেকে দাদন নেন মুড়ি কারিগররা। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছেন।
 
তবে মুড়ি তৈরির চালসহ অন্যান্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিশ্রমের সঠিক মজুরি পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন এ কাজের সাথে জড়িতরা। মেশিনে ভাজা মুড়ির দাপটে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে হাতে ভাজা মোটা মুড়ি। মেশিনের সাথে পাল্লা দিতে না পারায় পিছিয়ে পড়ছেন তারা। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় গ্রামটির অনেকেই এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন। তবে হাতে ভাজা মুড়ির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুড়ি কারিগড়রা।

হাতে ভাজা মোটা মুড়িতে কোন মেডিসিন নেই বলে খেতে সুস্বাদু। রমজানে চাহিদা পূরণে ব্যস্ততার কথা জানালেন আড়তদার। এছাড়া রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারের কিছুটা উর্ধ্বগতি থাকলেও ঝালকাঠির মুড়ির দাম বাড়েনি, মূল্য রয়েছে প্রায় গত বছরের মতোই।

ঝালকাঠির জেলার জন্য বেশ সুনাম বয়ে এনেছেন নলছিটির ২০টি গ্রামের মুড়ি কারিগররা। তাই সমিতি গঠন করে ঋণ নিতে চাইলে সে বন্দোবস্ত করার কথা জানান এ বিসিক কর্মকর্তা।
বছরের পর বছর মুড়ি ভেজেও শুধুমাত্র পূঁজির অভাবে ভাগ্য ফেরাতে পারেনি এই পরিবার গুলো। মুড়ি ভাজাকে কুটির শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করা হবে, এমনটাই এ শিল্পে জড়িতদের  প্রত্যাশা।

ঝালকাঠি আজকাল