• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ঝালকাঠি আজকাল

বৈশাখের সন্ধ্যায় পাতে রাখুন স্বাস্থ্যকর ইফতার

ঝালকাঠি আজকাল

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২২  

এবার নববর্ষ উদযাপন হবে রোজা মধ্যে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এদিন রোজা থাকবেন। তাই পহেলা বৈশাখের অন্যতম অংশ নানা স্বাদের খাবারের আয়োজন থাকবে না। দিনের বেলায় সম্ভব নয় তাই ইফতারে কিংবা ইফতারের পর রাখতে পারেন নববর্ষের আয়োজন।

যেহেতু গরম ও রোজা, তাই খাবারগুলো যেন স্বাস্থ্যকর হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ভাজা-পোড়া, অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিন। এমন খাবার ইফতারে রাখুন যা আপনাকে স্বস্তি দেবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক তেমন কিছু স্বাস্থ্যকর বৈশাখী ইফতারের রেসিপি- 

পান্তা ভাত

উপকরণ: ২৫০ গ্রাম চাল, ১০ কাপ পানি।

প্রণালী: একটি পাত্রে চাল ধুয়ে ২ কাপ পানি দিয়ে চুলার উপর বসিয়ে দিন। তারপর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। কয়েক মিনিট পর হাঁড়ি থেকে চাল তুলে টিপ দিয়ে দেখুন সিদ্ধ হয়েছে কি না। সিদ্ধ হলে বুঝবেন তা ভাত হয়ে গেছে। এবার ভাতের মাড় গালিয়ে নিন। ভাত ঠান্ডা হলে তাতে বাকি ৮ কাপ পানি ঢেলে শুকনো, ঠান্ডা জায়গায় ঢেকে রাখুন। ৮ ঘন্টা পর ঢাকনা খুলে দেখুন – তা পান্তাভাতে রুপান্তরিত হয়েছে। ব্যাস হয়ে গেলো পান্তা ভাত রান্না।

আলু ভর্তা

আলু আধা কেজি সিদ্ধ করে চটকে নিন। এবার পাত্রে ২ টেবিল চামচ তেল দিয়ে শুকনা মরিচ ভেজে পেঁয়াজ কুঁচি দিন। পেঁয়াজ বাদামী রং হলে পেঁয়াজ মরিচ লবণ দিয়ে চটকে আলু দিন এবার ধনেপাতা কুঁচি দিয়ে মেখে ভর্তা বানিয়ে নিন।

বেগুন ভর্তা

উপকরণ: বড় গোলবেগুন ১টি, সরিষা বাটা ১ চা চামচ, নারকেল মিহি বাটা ২ চা চামচ, টমেটো কুঁচি১ কাপ, পেঁয়াজ কুঁচি আধা কাপ, মেথি আধা কাপ, রাধুনী সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ কুঁচি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালী: বেগুনের গায়ে তেল মাখিয়ে পুড়িয়ে নিন। এবার পানিতে রেখে খোসা ছাড়িয়ে মেখে নিন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে মেথি ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি দিন। পেঁয়াজ একটু নরম হলে টমেটো সরিষা, নারকেল, কাঁচামরিচ ও লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে বেগুন দিন।  কড়াইয়ের তলা ছেড়ে এলে এবং একটু আঠালো হলে নামিয়ে নিতে হবে।

মুরগীর কলিজা ভর্তা

উপকরণ: ৫-৬ পিস মুরগির কলিজা, আধা কাপ পেঁয়াজ কুঁচি, ৬-৭টি শুকনা মরিচ, ২ টেবিল চামচ ধনিয়া পাতা, ১ টেবিল চামচ সরিষার তেল, ১ টেবিল চামচ সরিষার তেল, ১-১/২ চা চামচ আদা ও রসুন মিহি কুঁচি, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও স্বাদমতো লবণ।

প্রণালী: শুরুতেই কলিজাগুলোতে সামান্য লবণ মাখিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। ভিন্ন একটি পাত্রে তেল ও লেবুর রস বাদে বাকি উপকরণগুলো ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে। এরপর ভাজা কলিজাগুলো হাত দিয়ে গুঁড়া করে এতে তেল, লেবুর রস ও বাকি উপকরণগুলো দিয়ে দিতে হবে। সকল উপকরণ একসাথে মাখিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মুখরোচক মুরগীর কলিজা ভর্তা।

শিউলি পাতার বড়া

উপকরণ: শিউলি পাতা পরিমাণমতো, বেসন আধা কাপ, চালের গুঁড়া আধা কাপ, আদা বাটা আধা চা-চামচ, পানি পরিমাণমতো, জিরা বাটা আধা চা-চামচ, হলুদ সামান্য পরিমাণ, কালিজিরা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালী: বেসন এবং চালের গুঁড়া পানি দিয়ে গুলিয়ে তার সঙ্গে অন্য সব উপকরণ মিশিয়ে নিন। শিউলি পাতার ওপর খসখসে আবরণ তুলে ফেলে তা ধুয়ে বেসনের মিশ্রণে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ডুবো তেলে পাতাগুলো ভেজে নিন।

পাটশাক ঝোল

উপকরণ: খেসারি ডাল ২০০ গ্রাম, পাটশাক ছয় আঁটি, কাঁচা মরিচ চারটি, হলুদ, লবণ, সরিষার তেল ও পানি পরিমাণমতো।

প্রণালী: প্রথমে ১ লিটার পানিতে খেসারি ডাল সেদ্ধ করে নিন। এবার ১ চা-চামচ সরিষার তেল, লবণ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ডালটা ভালো করে নেড়ে নামিয়ে রাখুন। পাট পাতা কুচিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে কালিজিরা ফোড়ন দিন। পাট পাতা আর পরিমাণমতো লবণ দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। শাক হালকা ভাজা হলে এর মধ্যে ডালটুকু ঢেলে ১০ মিনিট রেখে নামিয়ে নিন।

ইলিশ পাতুরি

উপকরণ: ইলিশ মাছ ৬ টুকরো, সাদা সরষেবাটা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, আস্ত কাঁচা মরিচ ৩-৪টি (লম্বা ফালি করা), হলুদগুঁড়া কোয়ার্টার চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, কলাপাতা, সুতা, সরিষার তেল ৩ টেবিল-চামচ, সরিষার তেল পরিমাণমতো শ্যালো ফ্রাইয়ের জন্য।

প্রণালী: মাছের সঙ্গে সব মসলা মাখিয়ে ৩০ মিনিট মেরিনেট করে রেখে দিন। মাখানো মাছের টুকরাগুলো কলাপাতায় মুড়ে মুড়ে সুতা দিয়ে বেঁধে নিন। মুড়ানোর সময় একটি কাঁচা মরিচ ফালি দিয়ে দিন। প্যানে তেল গরম করে অল্প আঁচে এপিঠ-ওপিঠ করে ভেজে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। পাতার এপিঠ-ওপিঠ পোড়া পোড়া হলে নামিয়ে।

কাটা গলানো ইলিশ

উপকরণ: ইলিশ মাছের টুকরা ৬-৮টি,  টকদই ২ টেবিল-চামচ, আদাবাটা কোয়ার্টার চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৬-৭টি, হলুদগুঁড়া সামান্য, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল কোয়ার্টার কাপ, পানি ১ কাপ।

প্রণালী: একটি বাটিতে মাছের সঙ্গে সব উপকরণ মাখিয়ে ২-৩ ঘণ্টা মেরিনেট করুন। চুলার উপর প্রেশারকুকার বসিয়ে মেরিনেট করা মাছ ও পানি দিয়ে মৃদু আঁচে কুকারের ঢাকনা লাগিয়ে ২৫ মিনিট রেখে দিন। ২৫ মিনিট পর মাছের কাঁটাগুলো নরম হয়ে যাবে। কুকার থেকে মাছের টুকরোগুলো না ভেঙে সাবধানে তুলে নিয়ে পরিবেশন করুন। হাঁড়িতে এই রেসিপিটি রান্না করতে ১ ঘণ্টা সময় লাগবে।

ভাতে ভাপা ইলিশ

উপকরণ: বড় ইলিশ মাছের টুকরা ৮টি, কাঁচামরিচ কুঁচি ৫টি, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, হলুদের গুড়া এক চিমটি, পেয়াজ কুঁচি মিহি করে, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ এবং ৬টি লাউপাতা।

প্রণালী: ইলিশ মাছসহ সকল উপকরণগুলেঅ একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট মেরিনেট করে নিন। লাউপাতার মধ্যে মাখানো মাছের একেকটি টুকরা রেখে পাতাটি ভাঁজ করে রাখুন যেন খুলে না যায়। এবার ভাত হয়ে গেলে মাড় গালিয়ে চুলায় হালকা আঁচে বসিয়ে ভাতের মাঝখানে জায়গা করে লাউপাতায় মোড়ানো মাছগুলো রেখে দিন। এবার তার উপরে আবার ভাত দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন টানা ২০ মিনিট। এরপর ভাত সরিয়ে পাতাগুলো বের করে নিয়ে মাছগুলো বের করে খাবারের প্লেটে ভাতের উপর পরিবেশন করুন।

মুড়ির মোয়া

উপকরণ: মুড়ি ৫০০ গ্রাম, গুড় ২৫০ গ্রাম, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালী: গুড় হাড়িতে জ্বাল দিন। গুড়ে আঁশ হয়ে গেলে মুড়ির মধ্যে ঢালুন। তারপর বিভিন্ন আকার অনুযায়ী মোয়া তৈরি করে নিন। গুড় আঠালো থাকা অবস্থায় মোয়ার শেপ দিন।

সন্দেস

উপকরণ: ছানা ৫০০ গ্রাম, ক্ষীর ৩৫০ গ্রাম, গুঁড়া চিনি ১ কাপ, এলাচ গুঁড়া ১ চা চামচ, আমন্ড বাদাম বাটা ১ টে. চামচ, পেস্তা বাটা ১ টে. চামচ, ঘি ১ টে. চামচ।

প্রণালী: ছানা মথে মসৃণ করুন। ছানায় গুঁড়া চিনি, ঘি, পেস্তা ও বাদাম বাটা এবং এলাচ গুঁড়া মিশিয়ে চুলায় দিয়ে নেড়ে করে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। ক্ষীর মিশিয়ে পছন্দমতো আকারে কেটে নিন। এবার সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

বেকড মালপোয়া

উপকরণ: মালপোয়ার জন্যে- সুজি ১০০ গ্রাম, ময়দা ২০০ গ্রাম, আতপ চাল বাটা এক কাপ, চিনি স্বাদমতো, ঘি ভাজবার জন্যে, দুধ পরিমাণ মত, মৌরি এক চামচ, ছোট এলাচের গুঁড়ো দেড় চামচ।

ক্ষীরের গ্রেভির জন্যে- ফ্রেস ক্রিম দেড় কাপ, খোয়া ক্ষীর ৭৫ গ্রাম, কনডেন্সড মিল্ক পরিমাণ মতো, কাজুবাদাম, কিশমিশ, পেস্তা কুচি প্রয়োজন মতো, লবণ স্বাদ মতো।

প্রণালী: একটা মিক্সিং বোলে ঘি বাদে সব উপকরণ মেখে সেমি ঘন ব্যাটার তৈরি করতে হবে। এবার কড়াইতে ঘি গরম করে আঁচ কমিয়ে হাতা করে ব্যাটার দিয়ে ডুবো ঘি তে একটা একটা করে মালপো ভেজে তুলে রাখতে হবে একটা বেকিং ট্রেতে। এখন গ্রেভির সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে নিয়ে মালপোগুলোর উপরে ঢেলে দিয়ে মাইক্রোওভেনে ১৮০ থেকে ২০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ১৫ মিনিট বেক করুন। ব্যচ সহজেই তৈরি হয়ে গেল বেকড মালপোয়া।

ঝালকাঠি আজকাল